নিজস্ব প্রতিবেদন : মা আসলে এক আবেগের নাম। এক নিখাদ স্নেহের অপর নাম। মা বলতে শিশু বোঝে এক নিখাদ সম্পর্ক। তবে একজন নারীই যে মা হবেন, একজন পুরুষের মধ্যে অপত্য স্নেহ থাকবে না এমনটা নয়। হ্যাঁ, একজন নারী সন্তানকে ধারণ করতে পারেন, পুরুষের ক্ষেত্রে সেই গর্ভধারণ হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু অপরদিকে যদি ভেবে দেখা যায় একজন সন্তানকে লালন করেন মা, পালন করেন একজন পুরুষ। মা শরীরের মধ্যে তাকে বড় হতে দেখেন আর একজন পুরুষ তার ভাবনা চিন্তার মধ্যে অনুভব করে তার স্ত্রীর শরীরে একটি বীজ ধীরে ধীরে অঙ্কুরিত হচ্ছে।
আবার অপরদিকে যদি দেখি তাহলে একটা বিষয় কি কখনো ভেবে দেখেছেন নিজের সন্তানকে সকলেই ভালবাসতে পারে কিন্তু দত্তক নেওয়া সন্তানকে কী সকলে একই দৃষ্টিতে দেখে? নিজের সন্তান রোগগ্রস্ত হলেও মানুষ তাকে অপত্য স্নেহে ভরিয়ে দেয় কিন্তু অপরের সন্তান রোগগ্রস্ত হলে তার দায় নেওয়া কি চারটি খানি কথা!!! জেনে শুনে যিনি একজন রোগগ্রস্ত সন্তানকে অপত্যস্নেহে স্বেচ্ছায় দত্তক নেন এবং তার সকল দায়ভার গ্রহণ করতে পারেন তিনি পুরুষ না নারী দেখার দরকার নেই। তারমধ্যে নিখাদ অপত্য স্নেহ রয়েছে অর্থাৎ তিনি মা।
পুণের আদিত্য তিওয়ারি একজন সিঙ্গল ফাদার। তিনি একজন ইঞ্জিনিয়ার। তিনি কর্মরত ছিলেন পুণেরই একটি আইটি ফার্মে। ২০১৬ সালে তিনি এক পুত্র সন্তান দত্তক নেন। ঐ বাচ্চাটি ছিলো ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত।সব জেনেই তিনি সেই বাচ্চাকে গ্রহণ করেন লালন করেন মাতৃস্নেহে। আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব সকলেই তাকে মানা করেছিলো ঐ শিশুকে দত্তক নিতে। কিন্তু কারোর বাধায় তিনি শোনেননি।
ছেলের নাম দিয়েছেন অবনীশ। ৪ বছর আগে ১লা জানুয়ারিই অবনীশকে আনেন। তখন সে দুধের শিশু। আজ সে বড় হয়েছে। এই বড় হওয়ার পিছনে অবদান একমাত্র আদিত্যর। সেই তার মা, সেই তার বাবা, সেই তার বন্ধু।
অবনীশকে সুন্দর জীবন দিতে চেয়েছিলেন আদিত্য। একটা সুস্থ সুন্দর জীবন সেই লক্ষ্য পূরণে নিজের আইটি ফার্মের চাকরিও ছেড়ে দেন আদিত্য। নাহলে অবনীশকে সময় দিতেন কী করে!!!অবাক হচ্ছেন!!! ঐ যে বললাম মাতৃত্ব একটা সুন্দর ভাব। এই ভাব যার মধ্যেই জাগ্রত হোক না কেন তিনিই মা। তার লিঙ্গ দেখা উচিত নয়।
আদিত্যও তাই মনে করেন, “আমি এটা মনেই করি না যে পেরেন্টিং ব্যাপারটা লিঙ্গভিত্তিক হওয়া উচিত। একজন মা’ই শুধু সন্তানকে প্রবল অপত্য স্নেহে বড় করবেন, বাবার সেক্ষেত্রে ভূমিকা থাকবে না এমনটা একেবারেই ভাবা উচিত নয়। সিঙ্গল মাদাররা যদি একই সঙ্গে শিশুর মা ও বাবা হতে পারেন তাহলে সিঙ্গল ফাদাররা কেন হতে পারবেন না।”
Aditya Tiwari, a Pune resident who adopted a child with Down syndrome in 2016, will be felicitated with ‘Best Mommy of the World’ award on the occasion of #InternationalWomensDay in Bengaluru. pic.twitter.com/vuNVwNJSdH
— Deccan Herald (@DeccanHerald) March 8, 2020
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন ‘বিশ্বের সেরা মা’-এর খেতাব ছিনিয়ে নিলেন তাই একজন মা আদিত্য তিওয়ারি।