দেশের ৪০টি জেলায় পঙ্গপালের প্রকোপ, ক্ষতির মুখে ৮০০০ কোটি টাকার খাদ্যশস্য

নিজস্ব প্রতিবেদন : রয়েছে করোনা, যার জেরে লকডাউন। তার উপর আবার গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে হাজির পঙ্গপালের দল। লকডাউনের মাঝেই এখন বড় ত্রাস এই পঙ্গপাল। এত পরিমান পঙ্গপাল একসাথে নিজেদের দাপট দেখাতে শুরু করেছে যে ইতিমধ্যেই পাকিস্তানে এই পঙ্গপালের হাত থেকে বাঁচতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। তবে শুধু পাকিস্তান নয় একই অবস্থা ভারতের কয়েকটি রাজ্যে। ভারতে প্রথম এই পঙ্গপালের দল প্রথম দাপট দেখায় এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। পাকিস্তান থেকেই এই পঙ্গপাল উড়ে এসেছে ভারতের রাজস্থানে।

রাজস্থান ছাড়াও এই পঙ্গপালের দল তাদের দাপট দেখিয়েছে মধ্যপ্রদেশে। আর এবার মধ্যপ্রদেশের পর তারা পৌঁছে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশে। আগ্রা, আলিগড়, মথুরা, বুলন্দশহর, হাথরাস, এটা, ফিরোজাবাদ, মইনপুরি, এটাওয়া, ফারুক্কাবাদ, অউরিয়া, জালাউন, কানপুর, ঝাঁসি, মাহোবা, হামিরপুর ও ললিতপুর এই ১৭টি জেলার বাসিন্দারা এখন আশঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এই পঙ্গপালের দল এই সকল এলাকায় তাদের দৌরাত্ম্য চালাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজস্থানের ১৬টি জেলা সহ ইতিমধ্যেই দেশের প্রায় ৪০ টি জেলা এই পঙ্গপালের দৌরাত্বে বীতশ্রদ্ধ।

পঙ্গপালের এই দল কি করতে পারে তা আপনার কল্পনাতিত

পঙ্গপালের এই দল এক ঘন্টায় এক একর জমির ফসল নিমেষে শেষ করে দিতে পারে। এমনটাই জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের কৃষিবিভাগ দপ্তর। যে কারণে এই বিপুল পরিমান শস্য বাঁচাতে উঠে পড়ে লেগেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। কৃষকদের আলাদাভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ২০৪ টি ট্রাক্টর প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে রাসায়নিক স্প্রে করার জন্য। অন্যদিকে মধ্যপ্রদেশ থেকে দিল্লি হরিয়ানার একাংশ এই পঙ্গপালের দল তাদের দৌরাত্ম্য চালাতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।

কিন্তু এইভাবে পঙ্গপালের দল ছুটে আসার কারন কি?

গত দু’বছর ধরে আরব সাগরে তৈরি হয়েছে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় ও নিম্নচাপ। আর এই ঘূর্ণিঝড় ও নিম্নচাপই হলো পঙ্গপালের এত পরিমাণ বৃদ্ধির কারণ। ভেজা বালি মাটি এই পঙ্গপালের ডিম ও ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার অনুকূল পরিবেশ। আর আফ্রিকার এই পঙ্গপালের দল পাকিস্তান পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এই পঙ্গপালের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে না পারলে ভারতে কম করে ৮ হাজার কোটি টাকার মুগ ডাল ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। এছাড়াও, সবজি, তুলো, লঙ্কা ইত্যাদির ক্ষেত্রেও বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে। অর্থাৎ এই পঙ্গপালের দলকে আটকাতে না পারলে কয়েক হাজার কোটি টাকার শস্য ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।