বিশ্বকে করোনামুক্ত করতে কোটি কোটি ভ্যাকসিনের খরচ দিতে রাজি বিল গেটস

নিজস্ব প্রতিবেদন : মাইক্রোসফট কর্তা বিল গেটসের মহানুভবতার পরিচয় আবারও আমরা পেলাম। ইতিমধ্যেই কোভিডের গবেষণার জন্য তিনি প্রচুর অর্থ দান করেছেন। এবার তিনি বললেন, করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার হওয়ার পর সেই ভ্যাকসিন যাতে বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলির মধ্যে পৌঁছে যায় তার দায়িত্ব নেবেন তিনিই। কোভিড ভ্যাকসিন তৈরিতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করার পাশাপাশি দরিদ্র দেশগুলিতে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার কাজে সহায়তা করারও আশ্বাস দিয়েছে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।

পেনসালিভানিয়ার বায়োটেক ফার্ম ইনোভিও ফার্মাসিউটিক্যালসের ভ্যাকসিন গবেষণার কাজে পাশে দাঁড়িয়েছেন বিল গেটসও। হ্যাঁ, এই ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গবেষণার জন্য যাবতীয় আর্থিক অনুদান দিয়েছেন বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন ও কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস। এরপর বিল গেটস চাইছেন গাভি-র সহায়তায় বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলির মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন পৌঁছে দিতে। আর এই কোটি কোটি ভ্যাকসিনের খরচ উঠাতে তৈরি বিল গেটস।

গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন অর্থাৎ গাভি-র সিইও সেথ বার্কলে এপ্রসঙ্গে বলেছেন,”করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হওয়ার পর প্রথমে দিকেই এক কোটিরও বেশি ডোজ দরকার হবে। বিশ্বের সকল দেশকে করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্ত করতে গেলে কোটি কোটি ডলার প্রয়োজন হবে। বিশ্বের সকল দেশে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার মতো কাজে আর্থিকভাবে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বিল গেটস।”

মাইক্রোসফট কর্তা বিল গেটস বলেন, “কোন একটি নির্দিষ্ট দেশের সংক্রমণ বন্ধ হলেও বিশ্বজুড়ে অতি মহামারী ঠেকানো সম্ভব অত সহজ নয়।বিশ্বজুড়ে অতি মহামারী ঠকাতে গেলে তাই প্রতিটি দেশকে একে অন্যের সহায়তা করতে হবে।” এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকার নানা দেশগুলির সায়েন্স রিসার্চ ফার্ম যাতে কোটি কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ তৈরি করতে পারে তার জন্য বিপুল অর্থ দান করবেন মাইক্রোসফট কর্তা স্বয়ং।

বিল গেটসের কথায়, “এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকার নানা কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করবে আমাদের ফাউন্ডেশন। বছরে ১০০ কোটি বা ২০০ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ যদি তৈরি করা যায়, তাহলে কোভিড সংক্রমিত দেশগুলিতে দ্রুত সেই ডোজ পৌঁছে দেওয়া হবে। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া দেশগুলির জন্য ভ্যাকসিন কিনবে আমাদের ফাইন্ডেশন। গাভির ইমিউনাইজেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে ভ্যাকসিনের ডোজ পৌঁছে দেওয়া যাবে সেই সকল আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া দেশে।”

ভ্যাকসিন গবেষণার কাজে কোন দেশ কতখানি সাফল্য পেল কোন দেশ কতখানি এগুলি এই সকল বিষয় নিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানদের সাথে বা মেডিক্যাল অফিসারদের সাথে মাইক্রোসফটের কর্তা আলোচনাও করছেন।কিছুদিন আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এবিষয়ে আলোচনাও করেন বিল গেটস।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য কোভিড ভ্যাকসিনের প্রতিষেধক আবিষ্কারের দৌঁড়ে এখনো অবধি এগিয়ে আছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি, মোডার্না বায়োটেকের MRNA ভ্যাকসিন, ইনোভিও ফার্মাসিউটিক্যালসের DNA ভ্যাকসিন। এছাড়া জনসন অ্যান্ড জনসন, মার্ক অ্যান্ড কোম্পানি, স্যানোফির ভ্যাকসিন গবেষণার দিকে তাকিয়ে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও গাভি। এখন সময় শুধু প্রতিষেধক আবিষ্কারের। গোটা বিশ্ব তাকিয়ে রয়েছে কবে কোভিডের ভ্যাকসিন আবিষ্কার হবে। কবে আমরা সবাই আবার স্বাভাবিক সুস্থ জীবন পাব। কবে আমরা আবার আগের মত হাসতে পারবো? সেই সুন্দর সকালের অপেক্ষায় গোটা বিশ্ব। ততদিন সাবধানে থাকুন, সচেতন থাকুন, খেয়াল রাখুন নিজের ও অন্যদের।