নিজস্ব প্রতিবেদন : বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে আমরা একের পর এক বিখ্যাত গুণীজনদের হারাতে বসেছি। আর সেই হারানোর ধারাবাহিকতাকে বজায় রেখে এবার আমরা হারালাম বাংলার এক বিখ্যাত জীববিজ্ঞানী আনন্দ মোহন চক্রবর্তীকে। বীরভূমের সাঁইথিয়া শহরের এই বিজ্ঞানী বর্তমানে প্রবাসী বাঙালি। কর্মসূত্রে তিনি আমেরিকার বাসিন্দা। গত শুক্রবার ৮২ বছর বয়সে আমেরিকার ইলিনয়ে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। জীব বিজ্ঞানের গবেষণায় তাঁর যুগান্তকারী আবিষ্কার ‘জেনেটিক ক্রসলিঙ্কিং’।
জীববিজ্ঞানী আনন্দ মোহন চক্রবর্তী বিশ্বে প্রথম তৈরি করেছিলেন কৃত্রিম ভাবে তৈরি ব্যাকটেরিয়া। শিকাগো ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপনা করা অবস্থায় তিনি এই আবিষ্কার করেছিলেন। এই আবিষ্কারের মাধ্যমে সমুদ্র, মহাসমুদ্রে তেলের দূষণ রুখে দিতে পারে। তার এই আবিষ্কার মাইক্রোবায়োলজির পেটেন্টের জগতে আমূল পরিবর্তন ঘটায়। ২০০৭ সালে তিনি পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত হন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজিতে দৃষ্টান্তমূলক কাজের জন্য।
জীববিজ্ঞানী আনন্দ মোহন চক্রবর্তীর ৪ই এপ্রিল ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে বীরভূমের সাঁইথিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। এরপর সাঁইথিয়া হাইস্কুল, রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির ও সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে পড়াশোনা। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছিলেন ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে। এর পরেই কর্মসূত্রে পাড়ি দেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
জীববিজ্ঞানী আনন্দ মোহন চক্রবর্তীর আধুনিক ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তাঁর আবিষ্কার থেকে জানা যায় ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে ‘আজুরিন’ নামে এক বিশেষ প্রোটিন রয়েছে। আর যে প্রোটিন মানবদেহে ক্যান্সার ছড়িয়ে দেওয়া রুখে দিতে পারে। বাঙ্গালী এই বিখ্যাত বিজ্ঞানীর এই আবিষ্কার থেকেই পথ খুলে যায় ক্যান্সার চিকিৎসার অন্যতম উল্লেখযোগ্য মাধ্যম কেমোথেরাপি। আর এই প্রবাসী বাঙালি জীববিজ্ঞানীকে আমরা চিরতরে হারালাম ২০২০ সালের ১০ই জুলাই। তবে তিনি ইহলোক ত্যাগ করে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেও তাঁর কাজের জন্য তিনি অমর হয়ে থাকবেন বিশ্বাসীদের কাছে।