নিজস্ব প্রতিবেদন : কেরলের কোঝিকোড় বিমানবন্দরে ভেঙে পড়া এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ‘আইএক্স ১৩৪৪’ বিমানের দুর্ঘটনার কারণ এখনও জানা সম্ভব হয়নি। যদিও শনিবার বিমানের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হয়েছে ব্লাক বক্স। দুর্ঘটনায় কেড়েছে পাইলট, কোপাইলট সহ ১৮ জনের জীবন। বিমানকর্মী সহ ১৯০ জন যাত্রীর এই বিমানটি ঠিক কি কারণে ভেঙে পড়লো তা জানা সম্ভব হবে উদ্ধার হওয়া ব্ল্যাক বক্সটির সাহায্যেই।
কি এই ব্লাক বক্স, যার সাহায্যে বিমান দুর্ঘটনার কারণ জানা যায়, বিমানের সবকিছু পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেলেও কেন ব্ল্যাক বক্স অক্ষত থাকে?
প্রাথমিক সূত্র থেকে জানা গেছে, রানওয়েতে নামার সময় বিমানটির চাকা রানওয়েতে ছোঁয়নি। অভিজ্ঞ পাইলটদের দাবি রানওয়ের ওপর এসেও মাটি না ছোঁয়া খুবই অস্বাভাবিক। দুর্ঘটনার এইসব সম্ভাব্য কারণ নিয়ে নানা মতামত উঠে এলেও একমাত্র ব্ল্যাক বক্সের মাধ্যমেই আসল তথ্য উদঘাটন হবে। যেকোন বিমান দুর্ঘটনায় এই ব্ল্যাক বক্সই হল রহস্য উন্মোচনের একমাত্র চাবিকাঠি।
ব্ল্যাক বক্স হচ্ছে, ডিজিটাল ফ্লাইট রেকর্ডার (DFDR) ও ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (CVR)। এর সাহায্যে পাইলটদের কথোপকথন, বিমানের অবস্থান, অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ, গতি শেষ মূহুর্তে কেমন ছিল তা জানা যায়। ১৯৫০ সাল থেকে বিমানে এই ব্ল্যাক বক্সের ব্যাবহার শুরু হয়। প্রথমে মেটালিক স্ট্রিপে রেকর্ড রাখা বিমান মধ্যস্থ সমস্ত ঘটনা। যাতে জলে কিংবা আগুনের গ্ৰাসে পড়লেও নষ্ট না হয় তথ্য।
বর্তমানে ম্যাগনেটিক ড্রাইভ এবং মেমরি চিপ রাখা হয় ব্ল্যাক বক্সে। প্রত্যেক প্লেনেই রাখা থাকে দু’রকমের ব্ল্যাক বক্স। একটি ককপিট ভয়েস রেকর্ডার এবং অপরটি ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার। দুর্ঘটনার সময় কি ঘটেছিল এর সাহায্যে পরিস্কার তা জানা যায়। প্রায় ৮০ রকমের তথ্য পাওয়া যায় ব্ল্যাক বক্স থেকে।
বিমানের সমস্ত কিছু ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও ব্ল্যাক বক্স কেন ধ্বংস হয় না?
কারণ এটি তৈরি করা হয় স্টিল অথবা টাইটেনিয়াম ধাতব পদার্থ দিয়ে। এর সঙ্গে থাকে ইনসুলেটেড লেয়ার। ফলে জলের মধ্যে, বরফের মধ্যে বা অতিরিক্ত উত্তাপে এটি নষ্ট হয় না। বিমানের একেবারে পিছনের অংশে থাকে এই বক্স। যাতে দুর্ঘটনার প্রভাব সবচেয়ে কম পড়ে। স্থলে বা জলে যেখানেই থাকুক ৩০ দিনে ধরে আল্ট্রা সাউন্ড সিগন্যাল দিতে থাকে যাতে তদন্তকারীরা ব্ল্যাক বক্সের খোঁজ পায়। তবে এর ব্যতিক্রমও আছে। মালসিয়ান বিমান দুর্ঘটনায় ব্ল্যাক বক্সের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
প্রথম ব্যবহারের সময় ব্ল্যাক বক্সের বাইরের দেওয়ালের রঙ ছিল কালো। সেই জন্য এর নাম হয় ব্ল্যাক বক্স। বর্তমানে এর রং লাল ও পিঙ্ক রঙের। যাতে রাতে সহজেই এটি চোখে পড়ে।