নিজস্ব প্রতিবেদন : মুম্বইয়ের কুখ্যাত বৃষ্টিতে যখন চতুর্দিক জলে জলময়, যখন নিজের বাড়িতেও হাঁটু সমান জল তখন দেশের এই গর্বিত মা কান্তা মূর্তি নিজের কথা না ভেবে মুম্বইয়ের পশ্চিম মাতুঙ্গার তুলসি পাইপ রোডে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন খোলা ম্যানহোল পাহারা দিতে। ঘটনাটি ঘটে আগস্ট মাসের ৪ তারিখ। আর সেই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার দৌলতে গোটা দেশ এখন এই মাকে চিনে ফেলেছেন। প্রথমদিকে তার পরিচয় পাওয়া না গেলেও পরে তার নাম ও ঠিকানা জানা যায়।
দেশের সামনে খোলা ম্যানহোল পাহারা দিয়ে এমন অনন্য নজির সৃষ্টি করা এই কান্তা মূর্তির সম্পর্কে পরিচয় পাওয়ার পাশাপাশি জানা যায় প্রচন্ড বৃষ্টিতে তার বাড়ির অবস্থা নাজেহাল। ভেঙে পড়েছে বাড়ির একাংশ। তবে সেদিন নিজের বাড়ির এবং নিজের পরিবারের কথা না ভেবে এইভাবে পাহারা দেওয়ার ঘটনা সামনে আসতে দেশের সাধারণ মানুষ তাকে নিয়ে গর্ববোধ করতে থাকেন। তবে তার এমন পদক্ষেপের পিছনে রয়েছে পুরাতন এক ঘটনা। জানা গিয়েছে, ডাঃ দীপক অমরাপুরকর নামে এক ব্যক্তি ২০১৭-র ২৯ অগাস্টে মুম্বইয়ের পরেল এলাকার একটি খোলা ম্যানহলে পড়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন। ঘটনার দুদিন পর তার মৃতদেহ উদ্ধার হয় বরেলি এলাকা থেকে। এই ঘটনায় নাড়া দিয়েছিল কান্তা মূর্তিকে। তারপরেই তার এমন পদক্ষেপ।
খোলা ম্যানহোল পাহারা দেওয়ার বিষয়ে কান্তা মূর্তি দাবি করেছেন, তিনি ৭ ঘণ্টা খাওয়া-দাওয়া ভুলে ম্যানহোল পাহারায় দাঁড়িয়েছিলেন। এরপর বিএমসি কর্তৃপক্ষের কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসার পরেই তিনি ওই জায়গা ছেড়ে আসেন। আর কান্তা মূর্তির এমন কাজ গোটা দেশকে নাড়িয়ে দেয়।
#MumbaiSpirit -#MumbaiRains में सारा शहर जलमग्न है. Matunga, West #Mumbai पर कोई इस #Manhole में ना गिर जाए इसलिए यह महिला 5 घंटे तक उसके बगल में खड़े होकर लोगों को बचकर जाने को कहती रहीं.
आपदा में अपनी जान हर कोई बचाता है, कुछ ऐसे नेकदिल दूसरों की परवाह करते हैं.
Huge Respect? pic.twitter.com/DoqKQULSvz— Dipanshu Kabra (@ipskabra) August 7, 2020
কান্তা মূর্তির পরিবার সম্পর্কে জানা যায়, তার পরিবারে আট ছেলে মেয়ে রয়েছেন। যাদের মধ্যে পাঁচজনের বিয়ে হয়ে গেছে। তবে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি হলেন তিনি নিজেই। কারণ তার স্বামী কয়েক বছর আগে রেল দুর্ঘটনার পর প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েন। বর্তমানে কান্তা মূর্তি মুম্বইয়ের দাদরের একটি বাজারে ফুল বিক্রি করে সংসার চালান।
আর কান্তা মূর্তির সম্পর্কে এমন পরিচয় পাওয়ার পর এবং তার পারিবারিক অবস্থার কথা জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসেন অনেকেই। বিএমসির কর্মী থেকে এলাকার বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা এসে তার ভাঙ্গা বাড়ী মেরামত করে দেন। পাশাপাশি তার কাজের জন্য তার আর্থিক অবস্থার কথা চিন্তা করে অনেকেই তাদের সাধ্যমতো পুরস্কার হিসেবে আর্থিক সাহায্য তার হাতে তুলে দিয়েছেন। কথায় আছে ভালো কাজের ফল সব সময় ভালো হয়।