হিমাদ্রি মণ্ডল : গতকাল সকালে বীরভূমের সিউড়ি শহরের ৭৬ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা হাটজানবাজারের পিডব্লিউডি অফিসের কাছে থাকা একটি খাটালে দুধ আনার জন্য রওনা দেন। সেসময় সোনাঝুরি লজের কাছে এক ব্যক্তি নম্বর প্লেটহীন মোটরবাইক নিয়ে এসে ওই বৃদ্ধার পথ আটকায়। এরপর ওই বাইক আরোহী ওই বৃদ্ধাকে তার ছেলের নাম করে বলেন, “আপনি মৃত্যুঞ্জয়ের মা তো?” উত্তরে ওই বিরুদ্ধে জানান, হ্যাঁ।
এরপরে ওই বাইক আরোহী ওই বৃদ্ধাকে বলেন, “আপনি দুধ আনতে যাচ্ছেন তো। কিন্তু আজ তো জন্মাষ্টমী। খাটালে প্রচুর ভিড় হবে। দুধ পেতে অসুবিধা হবে। আমার বাইকে চাপুন, আমারও একটি খাটাল আছে আমি সেখান থেকে আপনাকে দুধ দিয়ে দেবো।”
ছেলের নাম করে পরিচয় দেওয়া ওই বাইক আরোহীর কথায় কোনো রকম সন্দেহ না করেই ওই বৃদ্ধা ওই বাইক আরোহীর বাইকে চেপে দুধ আনার জন্য রওনা দেন। আর এরপরেই বিপত্তি। ওই বাইক আরোহী ওই বৃদ্ধাকে হাটজানবাজারের রেল গেটের কাছে থাকা ওয়ার্কশপের কাছে নিয়ে গিয়ে বৃদ্ধার হাতে থাকা সোনার বালা ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার পর ওই বৃদ্ধা তার ছেলেকে নিয়ে গতকাল সকাল বেলাতেই সিউড়ি পুলিশ স্টেশনে একটি অভিযোগ লেখান। দুধ দেওয়ার নাম করে এমন ছিনতাইয়ের ঘটনায় তড়িঘড়ি সিউড়ি থানার পুলিশ তদন্তে নামে। তদন্তে নেমেই মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিউড়ি থানার পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করতে সক্ষম হয়।
আটক করার বিষয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় সিউড়ি থানার আইসি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, “মৃত্যুঞ্জয় চ্যাটার্জী নামে এক ব্যক্তি গতকাল সকালে তার মায়ের অলংকার চুরির ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ জানায় সিউড়ি থানায়। অভিযোগ পেয়ে আমরা তড়িঘড়ি শহরের মধ্যে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরাগুলি চেক করি। তারপরেই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ধরতে সক্ষম হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তি জেরার মুখে সমস্ত ঘটনার স্বীকার করেছে।”
চুরির এই ঘটনায় অভিযুক্ত শেখ মনসুর সোনার ওই বালা দুটি সাঁইথিয়ার মধুসূদন জুয়েলার্স নামে একটি দোকানে বিক্রি করেন। পুলিশ তা জানতে পেরে ওই দোকানে যায় এবং ওই দোকানের মালিককেও আটক করা হয়। এরপর পুলিশের তরফ থেকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর অভিযুক্ত ব্যক্তি সেখ মনসুর এবং ওই সোনার দোকানের মালিক দুজনকেই গ্রেপ্তার করে শুক্রবার সিউড়ি আদালতে তোলে। আদালত দুজনেরই পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।