নিজস্ব প্রতিবেদন : শান্তিনিকেতনের পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে গতকাল অর্থাৎ সোমবার পরিস্থিতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়াকালীন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী সেখানে এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তবে পরিস্থিতি তখনই বিগড়ে যায় যখন বিক্ষোভকারীরা তাদের আন্দোলনের পথ ঘুরিয়ে নিয়ে ভাঙচুর করতে শুরু করেন।
বিক্ষোভকারীদের তান্ডবে ভেঙ্গে ফেলা হয় বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী পাঁচিল, নষ্ট করা হয় বিশ্বভারতীর সম্পত্তি। ঘটনার পরই শান্তিনিকেতন থানায় দুবরাজপুর বিধানসভার বিধায়ক নরেশ চন্দ্র বাউড়ি, বোলপুরের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর ওমর শেখ, সুকান্ত হাজরা সহ আরও ৫ জন তৃণমূল নেতার নামে অভিযোগ দায়ের করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশের তরফ থেকে স্বতঃপ্রণোদিত একটি মামলা রুজু করা হয়, যে মামলায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর এই বিক্ষোভ এবং ভাঙচুর নিয়ে মঙ্গলবার তৃণমূলকে বিঁধলেন বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমের ময়ূরেশ্বরে দলীয় একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে বলেন, “দেখুন বাংলায় আপনারা এর আগে দেখেছেন যেটা রাজনীতির পীঠস্থান, মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে সেই বিধানসভায় ভাঙচুর করা হয়েছে। আর এই শান্তিনিকেতনকে এখন অ-শান্তিনিকেতন করে দিয়েছে, তৃণমূলের গুন্ডারা অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বে শান্তিনিকেতনকে কুলুষিত করে দিয়েছে। গুন্ডাগর্দি চলছে। আর শান্তিনিকেতনের মানুষ, বীরভূমের মানুষ, বাংলার মানুষ এর জবাব দেবে।”
এর পাশাপাশি তিনি বলেন, “দেখুন শান্তিনিকেতনের উল্টোদিকে যেখানে বিশ্ববাংলা নামে একটি ইউনিভার্সিটি খোলা হয়েছে। প্রচুর জমি সেখানে কৃষকদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল নাকি ইন্ডাস্ট্রি হবে। কিন্তু বর্তমানে সেখানে দেখা যাচ্ছে ১০ কোটি টাকার উপর খরচ করে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। সেখানে কৃষকদের ন্যায্য পাওনা এবং কর্মসংস্থান হলো না। সবথেকে বড় বিষয় সেখানে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে রাখা হলো আর এখানে পাঁচিল ভেঙে দেওয়া হল। বিশ্বভারতী যেটা করেছে সেটা গ্রীন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে।”
শান্তিনিকেতনে গতকালকের ঘটনার পর প্রথম থেকেই বিজেপি শিবির বারংবার এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের দিকে আঙ্গুল তুলেছে। বীরভূম জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল গতকালই এই তাণ্ডবের জন্য তৃণমূলকে দায়ী করেছিলেন। আর আজ বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তৃণমূল এই ঘটনায় কোনো রাজনৈতিক যোগ দেখতে পাচ্ছেন না। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জানিয়েছেন, “এক্স স্টুডেন্ট হিসাবে কেউ সেখানে যেতেই পারে। এখানে এই ঘটনার সাথে তৃণমূলের কোন সম্পর্ক নায়। আর তৃণমূল বিশ্বভারতী নিয়ে ইন্টারেস্টেডও নয়।”