অমরনাথ দত্ত : ঘটা করে রবিবার বীরভূমের বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয়ে একটি যোগদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। যে কর্মসূচিতে বেশ কয়েকজন বিজেপি ছাত্র সংগঠনের কর্মী সমর্থকদের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল ছাত্র সংগঠনে যোগদান করতে দেখা যায়। আর এই অনুষ্ঠান পর্ব শেষেই উঠে আসে শান্তিনিকেতনের রতনপল্লীর তৃণমূল নেতা বাপি সিংহের প্রসঙ্গ এবং বিশ্বভারতীর প্রসঙ্গ। আর এই দুই প্রসঙ্গেই বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল নিজের মন্তব্য পেশ করেন।
প্রথম প্রসঙ্গ হল, গতকাল রতনপল্লীর তৃণমূল নেতা বাপি সিংহের বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। যে অভিযোগপত্রে দিগন্ত পল্লীর কল্যাণী হাঁসদা নামে এক মহিলা শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ করেন তৃণমূল নেতা বাপি সিংহ তাদের বাসস্থান থেকে স্বপরিবারে উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছেন। পাশাপাশি তাদের আরও অভিযোগ ওই তৃণমূল নেতা কাটমানির দাবি করছেন। যে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয় তিনি রূপপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা ভারতী সিংহের স্বামী। পাশাপাশি এই ঘটনায় আরও একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি হলেন উর্মিতা রায়।
আর এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “সে যদি এমনটা করে থাকে তাহলে তাকে মানা হবে না। নোংরা কাজে আমরা প্রশ্রয় দিই না। আর প্রশ্রয় দেবো না। কেউ যদি নোংরামি করে তাহলে তাকে ছাড়া হবে না।”
দ্বিতীয় প্রসঙ্গ উঠে আসে বিশ্বভারতীর পাঁচিল। যে প্রসঙ্গ নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেকটা জল ঘোলা হয়ে গেছে। গত সোমবার বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতনের মাঠে পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে যে ঘটনা ঘটেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী একটি খোলা চিঠি পেশ করেছেন। যে খোলা চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেছেন শান্তিনিকেতনের পৌষমেলার মাঠে নানা অপকর্ম হয় বলে। পাশাপাশি সেই খোলা চিঠিতে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী একটি কথা উল্লেখ করেছেন, ‘গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ নিজে বহিরাগত ছিলেন। তিনি যদি এই অঞ্চল পছন্দ না করতেন তাহলে এখানে বিশ্বভারতী বিকশিত হতো না।’
আর এই বহিরাগত কথাটি সম্পর্কেই এদিন অনুব্রত মণ্ডল বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে কটাক্ষ করে বলেন, “বিশ্বভারতী খোলা মাঠ। এখানে কি দশ ফুটের পাঁচিল হয়! এটাকি জেলখানা? কোন ভিসি যদি এখানে চাকরি করতে এসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বহিরাগত বলে দেন তাহলে তার ভিসি হওয়ার যোগ্যতা আছে কিনা আমার জানা নাই। এই কথাটা বলার পর জানিনা এটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ভারতবর্ষের মানুষ বিদেশের মানুষ কিভাবে নেবেন। উনি কেন বলেছেন জানি না। তবে এই কথাগুলো তো সাধারণ কোন মানুষ বলতে পারেন না। অসুস্থতা বলে আর এক পাগলরা বলে। রবীন্দ্রনাথকে যদি বাইরের লোক বলে দেওয়া হয় তাহলে আমার কিছু বলার নেই। আর এই কথাটা শোনার পর আমার মনে হয় শুধু ভারতবর্ষের লোক নয়, গোটা বিশ্বের লোক হাসবে।”