নিজস্ব প্রতিবেদন : দেশের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি হিসাবে প্রণব মুখোপাধ্যায় শপথ নিয়েছিলেন ২০১২ সালের ২৫ জুলাই। ২০১৭ সালের ২৪ জুলাই শেষ হয় পাঁচ বছরের মেয়াদ।
ভারতীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা খুবই সীমিত। অনেকাংশে তা সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাসত্ত্বেও প্রণব মুখার্জি রাষ্ট্রপতি হিসাবে রাইসিনা হিলে তাঁর মেয়াদকালে নানা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন।
রাষ্ট্রপতির অন্যতম অধিকার, ফাঁসির আসামির প্রাণভিক্ষা বিবেচনা করা। রাষ্ট্রপতির মেয়াদকালে ৩৪ জন প্রাণভিক্ষা আবেদনকারীর মধ্যে ৪ জন ছাড়া বাকি ৩০ জনের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন প্রণব মুখার্জি। যা তাঁর সময় কালে দৃঢ় সিদ্ধান্ত হিসাবে বিবেচিত হয়। এর আগে দেখা গেছে বছরের পর বছর প্রাণভিক্ষার আর্জির ফাইল পড়ে আছে। কিন্তু প্রণব মুখার্জি তা ফেলে রাখেননি।
কুখ্যাত অপরাধীদের সঙ্গে সঙ্গেই সন্ত্রাসবাদে যুক্ত অপরাধীদের প্রাণ ভিক্ষার আর্জি খারিজ করেছেন বেশ কয়েকবার। ২৬/১১ মুম্বই হামলায় অভিযুক্ত আজমল কাসভ, সংসদ হামলায় অভিযুক্ত আফজল গুরু, মুম্বই বিস্ফোরণে অভিযুক্ত ইয়াকুব মেননদের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করেছেন।
১৯৮৬ সালে একই পরিবারে তেরোজনকে হত্যার অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত গুরমিত সিংহের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দেন প্রণব মুখার্জি। আবার চারজনের প্রাণদন্ডের সাজা বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করেছেন।
২০১২ সালের রাষ্ট্রপতির পদ গ্ৰহণ করার সময় প্রাণভিক্ষার ১০টি আর্জি বাকি পড়েছিল। একে একে তিনি এগুলোর সমাধান করেন। রামানাথ কোবিন্দ যখন রাষ্ট্রপতির পদ গ্ৰহণ করেন তখন ফাইল বাকি পড়েছিল না।
রাষ্ট্রপতিদের মধ্যে আর তাঁর আগে একমাত্র ভেঙ্কটরামন ৪৫ জনের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করেন।
রাষ্ট্রপতিদের মধ্যে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ ১৮০ জনের প্রাণভিক্ষা দিয়েছিলেন। মাত্র ১ জনের প্রাণভিক্ষা বাতিল করেছিলেন।
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণ ৫৭ জনের প্রাণ ভিক্ষার আবেদন মঞ্জুর করে ছিলেন। মাত্র ১ জনের আবেদন খারিজ করেছিলেন।
জাকির হোসেন ২২ জনের প্রাণ ভিক্ষার আবেদন পেয়েছিলেন। সকলকে প্রাণভিক্ষা দিয়েছিলেন।
ফখরুদ্দিন আলি আহমেদ ও এন সঞ্জিভ রেড্ডির সময় প্রাণভিক্ষা নিয়ে কোন আবেদন জমা পড়েনি।
জয়িল সিং ৩০ জনের আবেদন খারিজ করেছিলেন। দুইজনকে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন।
এসডি শর্মা ১৮ জনের আবেদন খারিজ করেছিলেন।
কে আর নারায়নের সময় সমস্ত আবেদন বাকি থাকে।
আবদুল কালাম একজনের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করেন আর একজনের ক্ষমা প্রার্থনা মঞ্জুর করেন।
প্রতিভা পাটিল ৩৪ জনের মধ্যে ৫ জনের আবেদন খারিজ করেন।
প্রণব মুখার্জির সিদ্ধান্তগুলি ভারতীয় রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি ওসংবিধান সম্মত ভাবেই কার্যকর হয় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।