অজন্তা ঘোষ : ‘জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।’ স্বামী বিবেকানন্দের এই বাণী সিউড়ির জনাকয়েক যুবক-যুবতীর কাছে প্রেরণা হয়ে উঠেছে। যে কারণে তারা যখনই শুনতে পান রাস্তার কোন কুকুর আহত অথবা অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে তখন তাদের মন কেঁদে ওঠে। ছুটে যান সেই সকল রাস্তার কুকুরদের সেবা-শুশ্রূষা করতে। ইতিমধ্যেই সিউড়ি শহরের আনাচে কানাচে অজস্র রাস্তার কুকুরকে সুস্থ করে নজির সৃষ্টি করেছেন তারা।
নজির সৃষ্টি করা ঐ সকল যুবক যুবতীদের থেকে জানা গিয়েছে, তারা ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে রাস্তার কুকুরদের অসুস্থ অথবা আহত হওয়ার খবর পেয়ে থাকেন। তারপর তারা সেই সকল স্থানে গিয়ে ওই সকল কুকুরদের সেবা শুশ্রূষা করতে শুরু করেন। ইতিমধ্যেই তাদের এই কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছেন জন্য তিরিশেক মানুষ, তবে সব সময় সক্রিয় থাকেন সাত থেকে আটজন। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন মানুষ এই যুবক যুবতীদের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।
ওই যুবক যুবতীদের থেকে এটাও জানা গিয়েছে যে, তারা প্রথমে ৫ থেকে ৬ জন পশুপ্রেমী বন্ধু-বান্ধব মিলে প্রথম এই কাজ শুরু করেন। তারপর আস্তে আস্তে কাজের চাহিদা বাড়তে থাকে এবং কাজের চাহিদা অনুযায়ী তাদের গ্রুপের সদস্য সংখ্যাও বাড়তে শুরু করে। আর এই সদস্যরাই প্রতিমাসে নিজেদের স্বার্থ মত চাঁদা দিয়ে এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।
সিউড়ির শহরের বিভিন্ন প্রান্তের এই যুবক যুবতীরা যে গ্রূপ তৈরি করেছেন তারা তার নাম দিয়েছেন ‘Hands of Love’। আর এই নামের মাধ্যমেই তারা তাদের পশুপ্রেমকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সিউড়ি শহরের আনাচে কানাচে।
গ্রুপের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাদের বর্তমানে কোন স্থায়ী জায়গা না থাকায় যেখানে খবর পান কোন কুকুর অসুস্থ অথবা আহত সেখানে তাদের সদস্যরা ছুটে যান এবং সেখানেই চিকিৎসা করেন। প্রয়োজন পড়লে পশু হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও চিকিৎসা করানো হয়। তবে যেহেতু পর্যাপ্ত জায়গা নেই সে কারণে তারা আহত অথবা অসুস্থ কুকুরটিকে নিয়ে এসে পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা করার সুযোগ পান না। একবার সেবা-শুশ্রূষা করে আসার পর আবার তাদের খবর নিতে হয় কেমন আছে ওই কুকুরটি।
পশুপ্রেমী বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে গড়ে ওঠা এই গ্রুপ বর্তমানে শহরের বিশিষ্ট জনদের নজর কেড়েছে। আর তাই অন্যান্যরাও যতটা সম্ভব তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে এই গ্রুপের সদস্যরা বর্তমানে অন্যান্যদের নজর কাড়লেও তাদের আক্ষেপ এক জায়গাতেই তাহলো ‘পর্যাপ্ত জায়গার অভাব’।