নিজস্ব প্রতিবেদন : দেশের বেশিরভাগ মানুষ তাদের কষ্টার্জিত অর্থ আমানতের জন্য বেছে নেন ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিট। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে লক্ষ্য করা গিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কগুলি এই ফিক্সড ডিপোজিট অর্থাৎ স্থায়ী আমানতের ক্ষেত্রে সুদের হার অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। যে কারণে স্থায়ী আমানত থেকে যতটা আয় হওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে ততটা আয় হচ্ছে না। যে কারণে আমানতকারীরাও বিকল্প পথের সন্ধানে রয়েছেন।
আর এই বিকল্প পথের সন্ধান হিসাবে প্রধানমন্ত্রী বয় বন্দনা যোজনা (PMVVY) অনেকটাই দিশা দেখাচ্ছে গ্রাহকদের। কারণ এই প্রকল্পে দীর্ঘ মেয়াদী আমানতে ৭.৪% সুদ দেওয়া হচ্ছে। এই বিপুল পরিমাণ সুদ দেওয়া হচ্ছে প্রবীণ নাগরিকদের। সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে এই বিপুল পরিমাণ সুদের কথা জানানো হয়েছে দেশের বৃহত্তম ইনসিওরেন্স সংস্থা LIC-র তরফ থেকে।
এই প্রকল্পে বিনিয়োগের মেয়াদ বেশ কয়েকদিন আগেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা প্রকল্পে বিনিয়োগের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩১ শে ২০২৩ পর্যন্ত করে দেয়। আর এই মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে স্বাভাবিকভাবেই সুফলতা পাবেন আমানতকারীরা বলে মত পোষণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
কিভাবে এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করা যায়?
এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করার জন্য প্রবীণ নাগরিকরা LIC-র অফিশিয়াল ওয়েবসাইট licindia.in তে লগইন করে বিনিয়োগ করতে পারেন। অন্যথায় স্থানীয় LIC-র এজেন্টের কথা বলেও বিনিয়োগ করতে পারেন।
কারা এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারবেন এবং এই প্রকল্পে বিনিয়োগের শর্তাবলী
কেবলমাত্র LIC-র মাধ্যমে প্রবীণ নাগরিকরা অর্থাৎ ৬০ বছরের ঊর্ধের ব্যক্তিরা এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এই প্রকল্পের মেয়াদ ১০ বছর। প্রকল্পে বার্ষিক সুদ দেওয়া হবে ৭.৪%।
পেনশন পদ্ধতি
বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের উপর ভিত্তি করে প্রতি মাসে ন্যূনতম ১০০০ টাকা পেনশন তুলতে পারবেন। পেনশন তোলার উর্ধ্বসীমা ৯,২৫০ টাকা। মোটের উপর বছরে সর্বাধিক ১,১১,০০০ টাকা পেনশন তুলতে পারবেন উপভোক্তারা।
পেনশন তোলার ক্ষেত্রে উপভোক্তারা কোন পদ্ধতিতে পেনশন তুলবেন অর্থাৎ মাসিক, ত্রৈমাসিক, ৬ মাস কিংবা এক বছর তাও বেছে নেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। পেনশন তোলার ক্ষেত্রে এনইএফটি (NEFT) এবং আধার ভিত্তিক পেমেন্ট সিস্টেম উপলব্ধ রয়েছে। আর মাসে ন্যূনতম ১০০০ টাকা পেনশন তোলার জন্য উপভোক্তাকে বছরে ১,৬২,১৬২ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।
এই পেনশন যোজনা পড়ার সময় কোন রকম মেডিকেল টেস্ট করা হয় না। পাশাপাশি বিনিয়োগের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কেউ যদি তার বিনিয়োগের অর্থ তুলে নিতে চান তাহলে তিনি ৯৮% ফেরত পাবেন। এর পাশাপাশি বিনিয়োগের তিন বছর পূর্ণ হওয়ার পর বিনিয়োগের ওপর ৭৫% পর্যন্ত লোন পাওয়া যেতে পারে।
প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে যদি কোন বিনিয়োগকারীর মৃত্যু হয়ে থাকে তাহলে প্রকল্পের টাকা ফেরত দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে প্রকল্পের সাথে নমিনি থাকা ব্যক্তি ওই বিনিয়োগের টাকা ফেরত পান। আর যদি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগকারী জীবিত থাকেন তাহলে বিনিয়োগের টাকা সহ চূড়ান্ত কিস্তি সমস্তটাই ফিরিয়ে দেওয়া হয়।