নিজস্ব প্রতিবেদন : দুর্গাপূজা আসতে হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন। তবে এরই মাঝে অশনিসংকেত নিয়ে হাজির আবহাওয়া। সাগরে দেখা দিয়েছে জোড়া নিম্নচাপ। আর এই দুই নিম্নচাপের মধ্যে একটি নিম্নচাপ শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আর এই সম্ভাবনা দেখা দিতেই সিঁদুরে মেঘ দেখলে বাংলা। কারণ মাস চারেক আগেই বাংলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’, এরপর আবার রয়েছে করোনা কাঁটা।
চলতি বছরের মে মাসের ২০ তারিখে বাংলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’-এর কারণে রাজ্য যে পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল সেই ক্ষতি সামলাতে মাসখানেকের বেশি সময় লেগেছে। এরপর আবার এই ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিপূরণ নিয়েও নানান দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’-এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দীনদরিদ্র মানুষেরা এখনো পর্যন্ত ঠিকঠাক সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি। আর তারই মাঝে পুনরায় আরও একটি ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনার কথাও উঠে আসতেই দুঃস্থ দরিদ্র মানুষগুলির কপালে ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে।
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী জানানো হয়েছে, চলতি মাস অর্থাৎ অক্টোবরেই বঙ্গোপসাগরে দুটি নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে। ৩০ সেপ্টেম্বর উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে একটি নিম্নচাপ এবং আরও একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে। এই দুটি নিম্নচাপের মধ্যে একটি নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আর এই নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলেই এর নাম হবে ‘গতি’।
সাগরে তৈরি হওয়া এই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। অর্থাৎ কারণে দুর্গা পুজোর আনন্দ ভেস্তে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এই ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে এর গতিপথ কোনদিকে হতে পারে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে আবহবিদেরা মনে করছেন ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তা বাংলাদেশের দিকে বয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের দিকে বয়ে গেলেও তার প্রভাব পড়বে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বলে মনে করা হচ্ছে। প্রভাব পড়ার পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ যদি বাংলার দিকে ঘুরে যায় তাহলে ফের একবার বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে এরাজ্য।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ হিসেবে এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ভারতের তরফ থেকে। উত্তর ভারত মহাসাগরীয় ঘূর্ণিঝড়ের নামের যে নতুন তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তার প্রথম ঘূর্ণিঝড়ের নাম ছিল ‘নিসর্গ’, যা ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ের উপর দিয়ে বয়ে গেছে। দ্বিতীয় তালিকায় রয়েছে ‘গতি’ এবং পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়গুলির নাম যথাক্রমে নিভার, বুরেভি, তকলি, যাস, গুলাব, শাহীন, জওয়াদ, অশনি, সিতরং, ম্যানডৌস ও মোচা।