পিনকন চিটফান্ড মামলায় টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু, আশা জাগছে প্রতারিতদের

Shyamali Das

Published on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্যজুড়ে চলা বিভিন্ন চিটফান্ড মামলার মধ্যে প্রথম পিনকন চিটফান্ড মামলার রায় ঘোষণা হল। তমলুকের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে এই মামলার রায় দেন অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক মৌ চট্টোপাধ্যায়। ২০ জন অভিযুক্তের মধ্যে মনোরঞ্জন রায় ও তাঁর স্ত্রী মৌসুমী রায় সহ আটজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ৫ লক্ষ টাকা জরিমানার সঙ্গে সকলকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় দেন বিচারক। ১০ জনকে বেকসুর মুক্তি দেয় হয়। বিচার চলাকালীন পিনকনের দুইজন ডিরেক্টর মারা যান।

Advertisements

বিচারক পিনকনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ১৫ হাজার আমানতকারীদের ৪৪ কোটি টাকা ফেরত দেবার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে নির্দেশ দেন অসুস্থ আমানতকারীদের দ্রুত টাকা ফেরাবার। এজন্য কোর্ট ইতিমধ্যেই একটি ফর্ম তৈরি করে দিয়েছে ক্ষতিগ্ৰস্ত আমানতকারীদের সুবিধার্থে। যাতে আমানতকারীর নাম, জমা করা টাকার পরিমাণ, ব্যাঙ্ক ও শাখার নাম, অ্যাকাউন্ট নম্বর, আইএফএসসি কোড এবং আধার ও প্রমাণ কার্ডের নম্বর উল্লেখ করার কথা বলা হয়।

Advertisements

কোর্টের লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক তথ্য সহ ওই ফর্ম পূরণ করে ব্যাঙ্কে পাঠাবেন। ব্যাঙ্ক সেই অ্যাকাউন্ট নম্বর ধরে অনলাইন পেমেন্ট করবে। ফর্মের অপর একটি কপি থাকবে কোর্টের কাছে। ফর্ম পূরণ করার সময় যেহেতু ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ হয়নি। কিন্তু এখন সংযুক্তিকরণের ফলে বেশকিছু শাখার নাম পরিবর্তন হয়েছে। এতে যাতে গ্ৰাহকদের কোন সমস্যা না হয় তারজন্য বিষয়টি দেখতে এফবিআইয়ের ম্যানেজারকে নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।

Advertisements

এছাড়া প্রেসিডেন্সি সংশোধনগারের সুপারকে কর্তব্যের কর্তব্যে গাফিলতির কারণ তাঁর পদ থেকে সরিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে একটি তদন্ত করে ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জামা করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। একই সঙ্গে গ্ৰেপ্তারি পরোয়ানা স্বত্বেও মনোরঞ্জন রায়ের স্ত্রীকে গ্ৰেপ্তার করতে না পারার কারণে তদন্তকারী সংস্থা আর্থিক অপরাধ শাখার অধিকর্তা ও কলকাতার নেতাজি থানার ভূমিকা নিয়েও তদন্ত করার জন্য রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।

কোর্ট আরও নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরকে, কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতাল ও পাঁচজন চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করার জন্য ও ১০ দিনের মধ্যে সেই তদন্তের রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পিনকন চিটফান্ডের আমানতকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতরণার মামলায় মনোরঞ্জন সহ চারজনকে বেশকয়েকদিন আগে বেঙ্গালুরু থেকে গ্ৰেপ্তার করে রাজস্থানের পুলিশ। পিনকনের বাজায়েপ্ত সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে বাড়ি, অফিস, জমি, নির্মীয়মাণ আবাসন প্রকল্প এবং বেশ কয়েকটি সংস্থা। বাজায়েপ্ত সম্পত্তির পরিমাণ বিপুল। এই সম্পত্তি বিক্রি করেই ক্ষতিগ্ৰস্ত গ্ৰাহকদের প্রাপ্য মূল্য ফিরিয়ে দেবার নির্দেশ দিয়েছে দায়রা আদালত।

অনান্য চিটফান্ড মামলায় ক্ষতিগ্ৰস্ত আমানতকারীরা এখনো সুবিচার না পেলেও পিনকন চিটফান্ডের রায় তাদের আশা দেখাচ্ছে তাঁরা তাঁদের আমানতের অর্থ বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে দ্রুত ফিরে পাবেন।

Advertisements