হিমাদ্রি মন্ডল, অমরনাথ দত্ত, লাল্টু : একদিকে বাঙ্গালীদের সবথেকে বড় উৎসব দুর্গোৎসব, আর অন্যদিকে রাজ্যজুড়ে লাগামছাড়া করোনা সংক্রমণ। রাজ্যে বিগত কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন চার হাজারের কাছাকাছি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা ৩১০০-৩৩০০। অর্থাৎ প্রতিদিন রাজ্যে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ৭০০ থেকে ৯০০ জন। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যাও প্রতিদিন ৬০-এর উপর। আর এমত অবস্থায় সংক্রমণ ঠেকাতে মঙ্গলবার থেকে ফের পুলিশকে ধরপাকড় শুরু করতে দেখা গেল। কারণ কথায় আছে, সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে, আঙ্গুল বাঁকা করতে হয়। বারবার সচেতনতা প্রচার চালানোর সত্ত্বেও মানুষ যখন সচেতন হননি, তখন পুলিশকেই আবার কঠোর হাতে নামতে হলো।
মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজ্যের পাশাপাশি বীরভূমের বিভিন্ন জায়গায় বীরভূম পুলিশের তরফ থেকে শুরু হয়েছে ধরপাকড়। বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন মহামারী ঠেকাতে মাস্ক ব্যবহার না করে বাড়ির বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ, তখনও অধিকাংশ মানুষকে দেখা যাচ্ছে এই সকল স্বাস্থ্যবিধি অবজ্ঞা করতে। যার পরেই এদিন বীরভূমের বিভিন্ন থানার পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে সেই সকল ব্যক্তিদের আটক করা এবং গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অভিযান শুরু হয়েছে সিউড়ি, বোলপুর, নানুর, লাভপুর, দুবরাজপুর, রামপুরহাট, মহঃবাজার, সাঁইথিয়া সহ প্রতিটি থানায়।
বীরভূম জেলা পুলিশের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, সকাল দশটা পর্যন্ত এখনো পর্যন্ত শুধুমাত্র সিউড়ি থানার অন্তর্গত এলাকা থেকে ৬৪ জনকে আটক করা হয়েছে এবং ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বোলপুরে আটক ৩০ জন, লাভপুরে আটক ৬৫ জন। দুবরাজপুরেও বেশ কয়েকজন আটক হয়েছেন। পুলিশের তরফ থেকে এটাও জানানো হয়েছে যে এই অভিযান লাগাতার চলবে। এর পাশাপাশি পুলিশের তরফ থেকে মঙ্গলবার থেকেই মাইকিং করে প্রচার করা হচ্ছে দুর্গাপূজার সময় সাধারণ মানুষকে কি কি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
ডিএসপি ডিএনটি দেবী দয়াল কুন্ডু জানিয়েছেন, “পুজোর সময় আমরা সিউড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণ করবো। টোটো চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। জরুরী যানবাহন ছাড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এমনকি পরিস্থিতির উপর বিচার করে মোটরবাইক চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে। আর মাস্ক এবং সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলার জন্য স্পেশাল ড্রাইভ চলতে থাকবে।”
প্রসঙ্গত, গতকাল অর্থাৎ সোমবার একটি জনস্বার্থ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে বর্তমান করোনা পরিস্থিতির উপর বিচার করে একাধিক বিধি নিষেধ সম্পর্কে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। আর এই নির্দেশিকাগুলিকে কঠোরভাবে প্রয়োগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারকে। আর এর পরেই মঙ্গলবার সকাল থেকে পুলিশী তৎপরতা লক্ষ্য করা গেল।