নিজস্ব প্রতিবেদন : দিন দিন আলু সহ তেল এবং অন্যান্য সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চপের দাম দেখতে দেখতে দাঁড়িয়েছে ৬-১০। স্থান বিশেষে কোথাও ৬ টাকা, কোথাও আবার ১০ টাকায় বিক্রি হয় চপ। তবে অবিশ্বাস্য হলেও বীরভূমের এক প্রত্যন্ত গ্রামে এই চপ এখনো পাওয়া যায় মাত্র ১ টাকাতেই।
আলু, তেল ইত্যাদির মূল্যবৃদ্ধিকে তোয়াক্কা না করে সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত কোমা গ্রাম পঞ্চায়েতের দিলীপ দে নামে এক ব্যবসায়ী বছরের পর বছর ধরে মাত্র ১ টাকাতেই চপ বিক্রি করে আসছেন। বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে এখনও ১ টাকায় চপ পাওয়া যায় এই কথা শুনে অনেকেই অবাক হয়ে যান, অবাক হওয়ার পাশাপাশি কৌতুহল বাড়তেই তারা ছুটে আসেন ওই দীলিপবাবুর দোকানের চপ খেতে।
তবে প্রশ্ন দীলিপবাবু মাত্র ১ টাকাতে চপ বিক্রি করে কিভাবে সামাল দেন?
আর এই লাখ টাকার প্রশ্ন প্রসঙ্গে দীলিপবাবু নিজেই জানিয়েছেন, তার লাভ করাটা লক্ষ্য নয়, তার লক্ষ্য হল মানুষকে খাওয়ানো। তিনি জানিয়েছেন, “আমাদের এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষ চাষবাসের উপর নির্ভরশীল। কেউ কেউ বাইরে শ্রমিকের কাজ করতে যান। যে কারণে প্রত্যেকেরই আর্থিক অবস্থা সঙ্কটজনক।” তাই এই সকল মানুষদের কথা ভেবেই তিনি দীর্ঘ ২০ বছরের বেশি সময় ধরে মাত্র ১ টাকাতেই চপ বিক্রি করে আসছেন।
দীলিপবাবুর এই ভাবে মাত্র ১ টাকায় চপ বিক্রি করার মূলে রয়েছে আরও এক বড় কারণ। যে কারণটি হলো তার মায়ের ইচ্ছা, মায়ের ইচ্ছায় তাঁর অনুপ্রেরণা। দীলিপবাবু জানিয়েছেন, তার মা-ই তাঁকে ১ টাকায় চপ বিক্রি করার নির্দেশ দেন। মানুষকে খাওয়াতে বলেন। আর সেই কথা মতোই তিনি এখনও এই ১ টাকাতেই চপ বিক্রি করে চলেছেন।
বছরের পর বছর ধরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে মাত্র ১ টাকায় চপ পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই খুশি এলাকার বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দাদের থেকে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন সকাল বেলায় দীলিপবাবু দোকান খুলে চপ বিক্রি করতে শুরু করার সাথে সাথে ১০টা বাজলেই সব চপ শেষ হয়ে যায়। আবার তিনি বিকাল বেলায় ৪টের পর দোকান খোলেন। তখনও সন্ধে ৭ টার মধ্যেই সব শেষ। শুধু এলাকার বাসিন্দারাই, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রাম থেকেও মানুষ দীলিপবাবুর কাছে চপ কিনতে ছুটে আসেন।