অমরনাথ দত্ত : চলতি বছর করোনা পরিস্থিতির জন্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। পৌষমেলা বন্ধ থাকায় মন খারাপ আপামর বাঙালির। কিন্তু পৌষমেলা বন্ধ থাকলেও রীতি মেনে পৌষ উৎসব পালিত হচ্ছে বুধবার ভোর থেকেই। তবে পৌষমেলা বন্ধ থাকার ঘটনা এই বছর প্রথম নয়, এর আগেও দু’বার বন্ধ থেকেছে পৌষমেলা।
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৪৩ সালের ২১ ডিসেম্বর বাংলার ৭ই পৌষ রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশের কাছে ব্রহ্ম ধর্মে দীক্ষিত হন। এরপর ১৮৪৬ সালে এই দিনটিকে স্মরণ রাখার জন্য কলকাতার গোরিটির বাগানে উপাসনা ও ব্রহ্ম মন্ত্রপাঠের আয়োজন করা হয়। যাকেই পৌষমেলার সূচনা হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। তবে শান্তিনিকেতনের পৌষমেলার সূচনা হয় ১৮৯১ সালে। সেই বছর শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠিত হয় উপাসনা গৃহ। ১৮৯৪ সালে পৌষ উৎসব এর পাশাপাশি মন্দির সংলগ্ন মাঠে শুরু হয় পৌষমেলা।
ইতিহাস থেকে জানা যায় ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহাপ্রয়াণ হলে সেই বছর রীতি মেনে পৌষমেলার আয়োজন করা হলেও সেই মেলা ছিল প্রাণহীন। আর এর পর দু’বছর ১৯৪৩ এবং ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে পুরোপুরি বন্ধ থাকে পৌষমেলা। এরপর আর পৌষমেলা বন্ধ থাকার মতো কোনো ঘটনা না ঘটলেও ৭৪ বছর পর ২০২০ সালে করোনার কারণে বন্ধ থাকলো পৌষমেলা।
১৯৪৩ সালে পৌষমেলা বন্ধ থাকার কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে দুর্ভিক্ষ। সে বছর মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের দীক্ষা নেওয়ার শতবর্ষ হলেও মেলার আয়োজন করা হয়নি। আর পরবর্তীতে ১৯৪৬ সালে দ্বিতীয়বারের জন্য পুরোপুরি বন্ধ থাকে পৌষমেলা। সে বছর মেলা বন্ধ থাকার কারণে সাম্প্রদায়িক অশান্তি।