নিজস্ব প্রতিবেদন : ইংরেজি নববর্ষের শুরুতেই Pfizer-BioNtech-এর করোনার টিকাকে ছাড়পত্র দিয়ে বিশ্বকে খুশির সংবাদ দিলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এখন বিশ্বের যেকোন দেশ এর টিকাকরণ করতে পারবে। আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহু দেশই করোনা টিকা ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু বেশি দামের কারণে এই মুহূর্তে ভারতে নাও আসতে পারে এই টিকা। এমনটাই ইঙ্গিত কেন্দ্রের।
ভারত করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে বিশ্বের প্রথমসারির দেশগুলির সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে এলেও অত্যধিক দামের কারণে এই মুহূর্তে এই করোনার টিকা সংগ্ৰহ নাও করতে পারে। কেন্দ্রের এক উচ্চ আধিকারিক ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভারত সম্ভবত আমেরিকার মেজর Pfizer এবং জার্মানীর BioNtech ভ্যাকসিন সংগ্ৰহ করবে না।
কারণ Pfizer ভ্যাকসিনের প্রতি ডোজের দাম যেখানে ৩৭ ডলার (প্রায় ২৭০৫ টাকা ৬২ পয়সা)। সেখানে Covishield ভ্যাকসিনের দাম প্রতি ডোজ ৩ ডলার (২১৯ টাকা ২৩ পয়সা)। Covishield অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনা গবেষণাগার থেকে তৈরি ও ভারতে প্রস্তুত ভ্যাকসিন।
pfizer-biontech-এর চেয়েও রাশিয়ান ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ভি’-এর দাম অনেক কম মাত্রা ১০ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭৩০ টাকা ৭৯ পয়সা।
ভারতের ভারত-বায়োটেক এবং জাইডাস ক্যাডিলার তৈরি প্রতিষেধকের দাম হতে পারে ৩ থেকে ৬ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় ২১৯ টাকার কিছু বেশি।
pfizer-biontech সংরক্ষণের জন্য দরকার শীততাপ নিয়ন্ত্রিত গৃহের ব্যবস্থা। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বা কোল্ড স্টোরেজের তাপমাত্রা রাখতে হবে মাইনাস ৭০ ডিগ্ৰি সেলসিয়াস। যা ভারতের মতো দেশে খুব ব্যয়বহুল।
ভারতে সম্ভবত ৬৮০ মিলিয়ন এই টিকার প্রয়োজন। তার জন্য খরচ পড়বে ৩ ডলারের হিসাবে ১.৯ বিলিয়ন টাকা। যদি প্রতি ডোজের জন্য ৩৭ ডলার বা ২৭০০ টাকা ব্যয় করতে হয় তাহলে ১২ গুণ বেশি টাকা খরচ করতে হবে ভারত সরকারকে।
যদি ভারতের সব লোককে টিকা দিতে হয় ৩ ডলার দামের ১ ডোজ তাহলেও ভারত সরকারকে ৬ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে ১ ডোজের জন্য ৩৭ ডলার বা ২৭০০ টাকা খরচ করতে হয় তার দাম পড়বে আকাশছোঁয়া।
এছাড়াও pfizer-biontech ভ্যাকসিন বিক্রি করতে হবে সরকারের চুক্তির মাধ্যমে। এই টিকা প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলি সরাসরি খোলা বাজারে এখনি বিক্রি করতে পারবে না।
ভারতের অর্থ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এও জানানো হয়েছে, প্রতিষেধক দেওয়ার ক্ষেত্রে ফান্ডের জন্য সরকার ব্যবস্থা করতে বদ্ধপরিকর। অর্থের পরিমানের উল্লেখ না থাকলেও প্রতিষেধক সংগ্ৰহের জন্য সরকার ব্যবস্থা নেবে। তবে উচ্চ মূল্যের এই pfizer-biontech টিকা সংগ্ৰহ করা হবে কিনা তা নিয়ে সরকার বিবেচনা করছে।
The Pfizer/BioNTech #COVID19 vaccine today became the first vaccine to receive WHO validation for emergency use since the outbreak began.
Equitable global access to vaccines is crucial to combat the pandemic.
? https://t.co/7WNcHhc3z8 pic.twitter.com/Kyjv5RNzjB
— World Health Organization (WHO) (@WHO) December 31, 2020
এর সাথে এই টিকা ভারতীয়দের ক্ষেত্রে কতটা নিরাপদ তাও নিয়েও প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন Subject Expert Committee। কারণ বিশ্বের মাত্র ৪.৩ শতাংশ এশিয়া মহাদেশের লোকদের উপর এই টিকার পরীক্ষা হয়েছে। কত শতাংশ ভারতীয়র উপর পিফাইজার টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে তা ঘোষণা হয়নি।
স্বাভাবিক ভাবেই দাম ও টিকার যথাযথ কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় এখনই pfizer-biontech টিকা ভারতে আসছে না। আর টিকার প্রয়োগের জন্য ভারতের মানুষকে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুটা সময়।