নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রতিভাবিশিষ্ট মানুষেরা এককথায় ব্যতিক্রমী। সমাজের আর পাঁচটা মানুষের মধ্যে চলতি জনসমুদ্রের মধ্যে তাদের আলাদা করে চেনা যায় তাদের ব্যতিক্রমী সত্তার জন্যই। আর এই ব্যতিক্রমী সত্তা-ই তাদের নাম ইতিহাসের পাতায় তুলে দেয়।
আসলে এই পৃথিবীতে বিশেষ প্রতিভা নিয়ে যে সকল মানুষেরা জন্মান, তাদের মধ্যে কিছু মানুষ নিজেদের প্রতিভাকে বাঁচিয়ে রাখেন চর্চার দ্বারা আর একসময় তারাই বিশ্বের মধ্যে রেকর্ড সৃষ্টি করেন। সম্প্রতি বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করা ১৬ বছরের কিশোরী আদিও এমনই বিশেষ প্রতিভার অধিকারী।
দুই হাত দিয়ে এখনও অবধি অনেককেই লিখতে দেখা গেছে, তবে চোখ বন্ধ করে দুই হাত দিয়ে লেখার মতো ক্যারিশমা এখনও অবধি কেউ দেখাতে পারেননি। আপাতদৃষ্টিতে মনে হওয়া সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখালেন ১৬ বছরের কিশোরী আদি।
চোখ বন্ধ করে দুই হাত দিয়ে লিখলেন তিনি। শুধু লিখলেনই না দুই হাত দিয়ে ১০ রকম ভাবে লিখে বিশ্বের মধ্যে রেকর্ড সৃষ্টি করলেন তিনি।মিনিটে ৪৫টি শব্দ লিখে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে সে। এর আগে পূর্ববর্তী রেকর্ড ছিলো মিনিটে ২৫টি শব্দ লেখার। সেই রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে আদি।
একই সাথে এক হাতে কন্নড় ভাষা অন্য হাতে ইংরেজিতে টানা লিখতে পারে আদি! ডান আর বাঁহাতে সমান গতিতে লেখার পাশাপাশি যে কোনোদিক থেকেই লেখা শুরু করতে পারে সে। দুই হাতেই ইডনি ডিরেকশন, লেফট হ্যান্ড স্পিড, রাইট এন্ড স্পিড, রিভার্স রানিং, মিরর ইমেজ, হেটারোটপিক, হেটারো লিঙ্গুইস্টিক, এক্সচেঞ্জ, ডান্সিং ও ব্লাইন্ড ফোল্ডিং কায়দায় লিখতে পারে সে আর তেমনই হাতের স্পষ্ট লেখা তার। মোট ১০ ধরনের লেখনীর কৌশল রপ্ত করেছে সে।
মেয়ের এমন অভিনব হস্ত লেখনীর কৌশলে গর্বিত বাবা গোপাল গোপাড়কার এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “ভিসুয়াল মেমোরি আর্টের অভিনব কৌশলের জন্য ইতিমধ্যেই দেশ বিদেশে আদির নাম ছড়িয়ে গেছে। হাতের লেখার কৌশলে একটা সম্পূর্ণ অধ্যায় ও একটা পাতার মধ্যেই লিখে দিতে পারে ও।”
শুধু তাই নয় করোনার জেরে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় বাড়িতে বসে আরও বেশ কয়েক ধরনের হাতের লেখা আত্মস্থ করে ফেলেছে সে।
ম্যাঙ্গালোরের আর্ট গ্যালারিতে আদির ৪০টি ছবি ইতিমধ্যেই প্রদর্শিত হয়ে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন টিভি চ্যানেলও তাকে ডেকে পাঠিয়েছে তার হস্ত কৌশল তুলে ধরার জন্য।
ম্যাঙ্গালোরে আদির বাবা-মায়ের স্বরূপা অধ্যয়না কেন্দ্র নামে একটি স্কুল আছে। সেখানেই পড়ে আদি।তবে আদির মধ্যে এই প্রতিভার স্ফূরণ লক্ষ্য করা গিয়েছিল ছোটবেলা থেকেই।
এই প্রসঙ্গে আদির বাবা জানিয়েছেন, “মাত্র আড়াই বছর বয়স থেকেই মেয়ের এই ধরনের প্রতিভা তার চোখে পড়ে। সবকিছুই খুব তাড়াতাড়ি শিখে ফেলে ও। বড় হয়ে ও আইএএস হওয়ার স্বপ্ন দেখে।”
উল্লেখ্য, দেশের পাশাপাশি বিদেশের অনেক হ্যান্ডরাইটিং এক্সপার্টরাই আদির লেখনীর প্রশংসা করেছেন। লেখা ছাড়া গান, ছবি আঁকা ও মিমিক্রিতেও দক্ষতা রয়েছে তার।