নিজস্ব প্রতিবেদন : একদিকে শাসকদলে ভাঙ্গন, অন্যদিকে বিরোধীদল বিশেষ করে গেরুয়া শিবিরের শক্তি বৃদ্ধি। আর এই পরিস্থিতিতে যখন জমে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি সেই সময় রাজ্যের থেকেও বঙ্গবাসীদের চোখ নন্দীগ্রাম বিধানসভায়। কারণ এই বিধান সভা থেকেই এবার ভোটে প্রার্থী হচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আর তারই বিপক্ষে আবার গেরুয়া শিবিরের হয়ে প্রতিদ্বন্দিতায় নামছেন তারই সরকারের প্রাক্তণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
নন্দীগ্রাম যেখানে রাজ্যের বাসিন্দাদের কাছে পাখির চোখ হয়ে উঠেছে সেই জায়গায় শাসক দল এবং গেরুয়া শিবির দুই পক্ষই একে অপরকে বিনাযুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দিতে নারাজ। দুই পক্ষই নিজেদের গুটি সাজাচ্ছে এই বিধানসভা কেন্দ্রকে কেন্দ্র করে। গেরুয়া শিবির যখন প্রতিদ্বন্দিতায় নামার জন্য ছক সাজাচ্ছেন ঠিক সেই সময় মঙ্গলবার প্রার্থী হওয়ার পর প্রথমবার নন্দীগ্রামে জনসভা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই জনসভায় তৃণমূল নেত্রী কি কি বার্তা দিলেন! চলুন দেখে নেওয়া যাক তার ভাষণের ১২টি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
১) নিজের জয় প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম থেকে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মানুষে মানুষে ভাগাভাগি নয়। নন্দীগ্রামে ৭০-৩০ নয়। আমরাই ১০০।
২) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নন্দীগ্রামে ভোটে দাঁড়ানো নিয়ে নানান প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি এদিন বলেন, আমি নন্দীগ্রামে কেন দাঁড়ালাম জানেন? আমি আগে যখন এখানে সভা করতে এসেছিলাম দেখেছিলাম কোন বিধায়ক নেই। পদত্যাগ করে চলে গিয়েছে। তখন আপনাদের জিজ্ঞাসা করলাম আমি এখান থেকে দাঁড়াবো? আপনাদের থেকে সাড়া পেলাম তাই দাঁড়ালাম। নয়তো ভবানীপুরেই দাঁড়াতাম। ওখানে আমাকে কিছুই করতে হতো না।
৩) নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের জন্য আমি বাড়ির কালীপুজোতেও যায়নি। আমি এই আন্দোলন নিয়ে নন্দীগ্রাম সিঙ্গুরকে জুড়ে দিয়েছিলাম। নন্দীগ্রাম যে সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছে সেই বার্তা জন্য আজ গোটা পৃথিবী নন্দীগ্রামকে চেনে।
৪) ১৪ই মার্চ গুলি চলার পর ডাক্তারের বারণ না শুনেই আমি এসেছিলাম। কোলাঘাটে আমার গাড়িতে পেট্রোল বোমা মারার চেষ্টা হয়েছিল। আনিসুরকে এতদিন ধরে জেলে বন্দি করে রেখেছে আমি ওর গাড়িতে চেপে নন্দীগ্রামে এসেছি। চন্ডিপুরে আমাকে গালাগালি করা হয়েছিল।
৫) ১০ নভেম্বর ১০ জনকে মেরে ফেলা হলো নাকি গুম করা হলো কেউ জানে না। সেদিনও আমরা তমলুকে ছিলাম আর আমার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল।
৬) ভুলতে পারি নিজের নাম? ভুলবো না কো নন্দীগ্রাম।
৭) কর্মীরাই হলো দলের সম্পদ। আপনারা যদি মনে করেন আমার এখানে দাঁড়ানো উচিত নয় তাহলে আমি দাঁড়াবো না। আমি মনোনয়ন জমা দেবো না, চলে যাবো।
৮) কেউ কেউ বলছেন আমাকে বহিরাগত। আমিতো বাংলার মেয়ে। আমি এখানকার আন্দোলনকারী। আমাকে কি করে বহিরাগত বলে? আপনারা গুজরাত, দিল্লি থেকে এসে বাংলার লোক হয়ে গেলেন, আর আমি বহিরাগত হয়ে গেলাম!
৯) আমি হিন্দু ঘরের মেয়ে, আমার সঙ্গে হিন্দু কার্ড খেলতে যাবেন না। হিন্দু ধর্ম মানুষকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চন্ডীপাঠ করে নন্দীগ্রামের মঙ্গল কামনা করেন।
১০) সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে অন্যান্য একাধিক কাজ করেছি। হলদিয়া সাথে নন্দীগ্রামকে একটা সেতু দিয়ে জুড়ে দেবো। নন্দীগ্রামকে মডেল গ্রাম তৈরি করবো। এখানে কোনো বেকার থাকবে না। দলের ইস্তেহারে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি উল্লেখ থাকবে।
১১) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানান নন্দীগ্রামে তিনি একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন এবং সেখানে তিন মাস পর পর আসবেন।
[aaroporuntag]
১২) ওরা টাকা দিলে টাকা নিয়ে নিন কিন্তু ভোট দেবেন না। ভয় দেখালে ভয় পাবেন না। ভোট বাক্সে ওদের এপ্রিলফুল করে দিন।