নিজস্ব প্রতিবেদন : বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে বিরোধীরা বারংবার অভিযোগ করে আসছেন ‘তিনিই হলেন সর্বেসর্বা’। বহু মানুষকে এটাও বলতে দেখা যায়, জেলার নেতা মন্ত্রীরা তার কাছে যেন হাতের পুতুল। তবে এই সকল অভিযোগ বা দাবি এযাবৎ বিরোধীরা করে আসলেও সম্প্রতি মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের প্রকাশ্য জনসভায় একটি মন্তব্য ঘিরে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ফিরহাদ হাকিম দাবি করেছেন ‘দিদিকে ব্ল্যাকমেল করেছে অনুব্রত’।
ভোটের আগে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পর রাজ্যের একাধিক বিদায় বিধায়করা টিকিট না পেয়ে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। একাধিক বিধায়ককে দল ত্যাগ করতে দেখা যায়। আর এই তালিকায় রয়েছেন বীরভূমের নলহাটি বিধানসভার বিধায়ক মইনুদ্দিন শামসও। তিনি টিকিট না পেয়ে প্রার্থী ঘোষণার দিনই ফেসবুকে লাইভ করে তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ করার ঘোষণা করেন।
এরপর গত সোমবার কলকাতার বন্দর এলাকার ৭৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের একটি কর্মীসভায় বক্তব্য রাখার সময় ফিরহাদ হাকিম মইনুদ্দিন শামসের ভাই নিজামুদ্দিন শামসের সামনে বক্তব্য রাখার সময় বলেন, “যখন প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হচ্ছে তখন আমি পাশে বসে জানতাম না যে ওর (মইনুদ্দিন) নাম নেই। যখন নাম বের হলো না তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম এটা কি হলো? তখন মমতা ব্যানার্জি বললেন অনুব্রত আমাই ব্ল্যাকমেল করেছে। জোর করে ওর নাম দিয়ে দিলো, এর নাম কেটে দিলো। আমি কি করবো। তখন আমি বললাম আপনি দলের সবচেয়ে বড় নেত্রী। আপনি কি করবেন? তখন উনি বলেন, আমাকে সব সামলাতে হয়। সবাইকে রাখতে হয়। ওঁর টিকিট না পাওয়ার আফসোস আমারও আছে।”
ফিরহাদ হাকিমের এই মন্তব্যের ভিডিও মইনুদ্দিন শামসের ভাই নিজামুদ্দিন শামসের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে কেউ লাইভ করেন। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ার এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই আমরা (BanglaXp) করিনি। তবে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মইনুদ্দিন শামসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমাদের জানান, “আসল সত্যিটা বেরিয়ে এলো। কারণ আমাকে টিকিট না দেওয়ার কোন কারণ দেখাতে পারবে না। এখন দলের সুপ্রিমোর উপর কি ব্ল্যাকমেল করা হয়েছে তার দলের নেতৃত্বরাই জানবেন।”
[aaroporuntag]
তবে এই ঘটনার পর রাজনৈতিক মহলে নানান প্রশ্ন উঠেছে। সেসকল প্রশ্নগুলির মধ্যে অন্যতম হলো দলবদলের বাজারে অনুব্রত মণ্ডল কি সত্যিই চাপ দিয়ে প্রার্থী করিয়েছেন? এই প্রশ্নও ঘুরছে, নাকি ফিরহাদ হাকিম নিতান্তই পরিস্থিতি ম্যানেজ করার জন্যই এমন বক্তব্য রেখেছেন? তবে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এখনো পর্যন্ত বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের কোন রকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।