প্রসূন দাস : বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সাথে বোলপুরের বিজেপি প্রার্থী ডঃ অনির্বাণ গাঙ্গুলীর পরামর্শ মাফিক শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বসন্ত উৎসবের দিন এমনই অভিযোগ তুলেছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তবে সেই অভিযোগের কয়েকঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই পাল্টা একাধিক ছবি সহ বিশ্বভারতীর উপাচার্য এবং তৃণমূলের আঁতাত নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গাঙ্গুলি।
অনির্বাণ গাঙ্গুলী একটি ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করেছেন, “আমি কখনো অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি যাইনি অথবা পাত পেড়ে খাই নি। কিন্তু বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে দেখা গিয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি যেতে খাওয়া-দাওয়া করতে এবং তাদের সাথে মঞ্চ শেয়ার করতে। সুতরাং তারা নিজেরাই একটি নাটক লিখেছেন এবং তা পরিবেশন করছেন। এই নাটকের সংলাপ থেকে অভিনেতা সকলেই বিশ্বভারতীর উপাচার্য এবং তৃণমূল কংগ্রেসের তাবড় তাবড় নেতারা। এই নাটকের সম্মতি রয়েছে স্বয়ং নবান্ন থেকে। কারণ তারা বিশ্বভারতীতে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছেন যাতে রাজনৈতিকভাবে তৃণমূল সেখান থেকে ফায়দা লুটতে পারে।”
এর পাশাপাশি তিনি এটাও প্রশ্ন তুলেছেন, “যখন পৌষ মেলার স্টল করার জন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এডভান্স হিসাবে টাকা নেওয়া হলো আর সেই টাকা ফেরত দেওয়া হল না তখন এখানকার তৃণমূল নেতারা কি করলেন? তারা কিছু করেননি বরং মানুষকে উসকে দিচ্ছেন যাতে করে তৃণমূল কংগ্রেস এই বিশ্বভারতীকে কেন্দ্র করে ভোটে ফায়দা তুলতে পারে।”
অনির্বাণ গাঙ্গুলী শুধু অনুব্রত মণ্ডল নন, এর পাশাপাশি চন্দ্রনাথ সিংহ, আশীষ বন্দোপাধ্যায় সহ একাধিক রাজ্যের মন্ত্রীদের সাথে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ছবি তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি অনির্বাণ গাঙ্গুলী নিজের বক্তব্য এবং যুক্তিকে প্রতিস্থাপিত করার জন্য আরও কিছু উদাহরণ দিয়েছেন। ভারতের সকল উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে বিশ্বভারতীর একাধিক অধ্যাপক অধ্যাপিকাদের সাসপেন্ড করার প্রসঙ্গ। এই প্রসঙ্গে তাঁর বার্তা, “বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিজেপি, বাম মনোভাবাপন্ন অধ্যাপক, কর্মীদের সাসপেন্ড করেছেন। কিন্তু, কখনও তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি। এর থেকেই বোঝা যায় যে পুরো ঘটনা পরিকল্পনামাফিক।”
[aaroporuntag]
প্রসঙ্গত, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এতদিন বিজেপি মনোভাবপন্ন উপাচার্য বলেই পরিচিত ছিলেন। এমনকি তাঁর এই সকল মনোভাবের জন্য তৃণমূলের নেতারা একাধিকবার তার বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোলপুর সফরে এসে বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে ‘বিজেপি মার্কা মারা উপাচার্য’ বলে প্রকাশ্যে মতামত পোষণ করেছিলেন। তবে এসবের পর আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে পুরো গেম ঘুরিয়ে দিলেন বোলপুরের বিজেপি প্রার্থী বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি তারা এটাও মনে করছেন, ফের রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়ালো বিশ্বভারতী এবং বিশ্বভারতীর উপাচার্য।