নিজস্ব প্রতিবেদন : ভোট ঘোষণার পর শাসকদল তৃণমূল রাজ্যের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির অনেক আগেই রাজ্যের ২৯৪টি আসনের মধ্যে ২৯১টি আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে। পরবর্তীতে ক্ষোভ-বিক্ষোভের কারণে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রের প্রার্থী তালিকা বদল করতে হয় শাসকদলকে। তবে এবার কোনরকম ক্ষোভ বিক্ষোভ ছাড়াই মুরারই বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী বদলের পথে হাঁটল শাসকদল।
তৃতীয় দফা ভোটের আগে শনিবার মুরারই বিধানসভার পূর্বঘোষিত প্রার্থী আব্দুর রহমানের জায়গায় নতুন প্রার্থী করা হলো ডাঃ মোশারফ হোসেনকে। পেশায় তিনি একজন শিশু চিকিৎসক। অন্যদিকে পূর্বঘোষিত প্রার্থী আব্দুর রহমান এলাকার বিদায়ী বিধায়ক। গত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি খুব অল্প ব্যবধানে ২৮০ ভোটে কংগ্রেস প্রার্থীকে পরাজিত করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ এই প্রার্থী বদলের কারণ কি?
প্রার্থী বদলের কারণ হিসেবে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল আগেই জানিয়েছিলেন, পূর্বঘোষিত প্রার্থী আব্দুর রহমান করোনা আক্রান্ত। যে কারণে প্রার্থী বদলের প্রয়োজন হয়ে উঠেছে। আর তৃণমূলের তরফ থেকে প্রার্থী বদলের যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে তাতেও সেই একই কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, গত ২৬ মার্চ থেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে আব্দুর রহমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অন্যদিকে ডাঃ মোশারফ হোসেনকে প্রার্থী করা নিয়ে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে যুযুধান তৈরি হয়। এলাকায় কংগ্রেস প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ বিক্ষোভ তৈরি হলে এই মোশারফ হোসেনই কংগ্রেসের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছিলেন প্রার্থী বদলের জন্য (সূত্র)। যার পর দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মোশারফ হোসেনকেই এলাকায় কংগ্রেস প্রার্থী করা হবে। মোশারফ হোসেন প্রার্থী হওয়ার জন্য কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মিল্টন রশিদের থেকে একটি চিঠিও লিখিয়ে নিয়ে যান স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে ছুটি নেওয়ার জন্য। কিন্তু তারপরেই পাশা বদলে যায় মাত্র একটি ফোনে।
মোশারফ হোসেনকে স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার আবেদন করেন। আর সেই আবেদন ফেলতে পারেননি বলে জানিয়েছেন মোশারফ হোসেন। এর পর পুনরায় তিনি তৃণমূলের থেকে চিঠি লিখিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরে জমা দেন প্রার্থী হওয়ার জন্য ছুটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে। এর পরেই শনিবার তাকে মুরারই বিধানসভার প্রার্থী ঘোষণা করে তৃণমূল।
[aaroporuntag]
প্রসঙ্গত, মোশারফ হোসেনের পরিবার দীর্ঘদিন ধরেই কংগ্রেসী পরিবার। তার বাবা মোতাহার হোসেন ছিলেন কংগ্রেস আমলে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এর পাশাপাশি এই পরিবারের এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। সেই জায়গায় প্রভাবশালী কংগ্রেসি ঘরানার ছেলেকে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করার ফলে শাসকদল বাজি মারলো বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।