মুকেশ আম্বানির গাড়ির চালকের বেতন লজ্জায় ফেলবে কর্পোরেট সংস্থার কর্মীদের

Sangita Chowdhury

Published on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বৃহৎ শেয়ারের মালিক এছাড়া তিনি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের‌ও মালিক। তার আকাশছোঁয়া সম্পত্তির পরিমাণ প্রতিবছর উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এশিয়ার অন্যতম ধনী এই ব্যক্তির নিজস্ব বাড়ি এন্টিলা থেকে শুরু করে তার স্ত্রীর সংগ্রহে থাকা শাড়ি সব‌ই দামি ও আকর্ষণীয়। পৃথিবীর সমস্ত কোম্পানির বিলাসবহুল গাড়িই তার সংগ্রহে মজুদ রয়েছে, তবুও নতুন অভিনব গাড়ির সন্ধানে তিনি সবসময় উৎসুক হয়ে থাকেন। নিত্যনতুন বিলাসবহুল এই সকল গাড়ির চালকের নিয়োগ প্রক্রিয়াও তাই যেমন অদ্ভুত তেমনই চমকপ্রদ তাদের পারিশ্রমিক।

Advertisements

সম্প্রতি মুকেশজি ফের সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে এসেছেন একটি নতুন গাড়ি কেনার কারণেই। তার নতুন কেনা গাড়িটির উচ্চ নিরাপত্তাজনিত বৈশিষ্ট্যের জন্য‌ই তিনি আলোচিত হচ্ছেন। তার নতুন কেনা গাড়িটা বি এম ডব্লিউ ৭ সিরিজের একটি গাড়ি। যার বর্তমান এক্স শোরুম মূল্য হল ৮.৭ কোটি টাকা। এই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করতে খরচ পরেছে ১.৬ কোটি টাকা। কঠোর নিরাপত্তাজনিত বৈশিষ্ট্যের জন্য‌ই এই গাড়িটি অন্য সকল গাড়ির থেকে আলাদা। জানা গেছে যে এই গাড়িটি নিরাপত্তায় প্রধানমন্ত্রীর গাড়িকে‌ও টক্কর দিতে পারে। পাশাপাশি টক্কর দেবে এই সকল গাড়ির চালকদের বেতন।

Advertisements

গাড়ির বিশেষত্ব

Advertisements

১) বুলেটপ্রুফ কাঁচ : ভি আর সেভেন ব্যালেস্টিক মানের নিরাপত্তা রয়েছে এই গাড়িতে। যার ফলে এই গাড়ির নিরাপত্তা যেকোনো রাষ্ট্রপ্রধানের গাড়ির নিরাপত্তার সমান। এই গাড়িতে ব্যবহৃত প্রতিটি কাঁচ ৬৫ মিলিমিটার পুরু বুলেটপ্রুফ কাঁচ দিয়ে তৈরি। এই কাঁচগুলির মোট ওজন ১৫০ কেজি, যার ফলে একে ফরটি সেভেন থেকে বের হওয়া বুলেটে এই গাড়ির কাঁচ ভাঙবে না।

২) গ্রেনেড আক্রমণ থেকে রক্ষা : এই গাড়ির নিরাপত্তা এমন ভাবেই প্রস্তুত করা হয়েছে যে যদি ১৭ কেজি ওজনের টিএনটি বিস্ফোরক ও দেওয়া যায় তাহলেও এই গাড়ি দুমড়ে-মুচড়ে যাবে না। অর্থাৎ গ্রেনেড আক্রমণ হলেও গাড়ির মধ্যে থাকা ব্যক্তিরা সুরক্ষিত‌ই থাকবেন।

৩) উচ্চ তাপমাত্রা ও অগ্নি প্রতিরোধক : এই গাড়ির জ্বালানি ট্যাঙ্ক উচ্চ তাপমাত্রা ও অগ্নি প্রতিরোধক ভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। যার ফলে বাইরে থেকে কোনরকম রাসায়নিক হামলা হলেও গাড়ির মধ্যে থাকা বিশেষ অক্সিজেনের ব্যবস্থার জন্য এই গাড়ির মধ্যে থাকা ব্যক্তি অক্ষত থাকবেন।

৪) উন্নত মানের কেবিন ও ডবল লেয়ার টায়ার : এই গাড়ির কেবিন‌ও অগ্নি প্রতিরোধক। এই কেবিনের মধ্যে স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাও মজুদ আছে। এই গাড়ির চাকা বুলেটপ্রুফ ও গাড়ির টায়ার ডবল লেয়ারের, যার ফলে গুলি লাগলেও গাড়ির চাকা পাঞ্চার হবে না আর যদি কখনো বুলেট এর দ্বারা গাড়ির চাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবুও এই গাড়ি ঘণ্টায় ৮০ কিমি বেগে চলবে।

৫) গাড়ির ইঞ্জিন : টুইন টার্বো সিক্স পয়েন্ট জিরো লিটার বি টুয়েলভ পেট্রোল ইঞ্জিন থাকার ফলে এই গাড়ির ইঞ্জিন থেকে ৫৪৪ বিএইচপি শক্তি উৎপন্ন হবে। এই গাড়ি ৬.২ সেকেন্ডে ঘন্টায় ১০০ কিমি গতি অতিক্রম করতে পারে। এই গাড়ির সর্বোচ্চ গতিবেগ হল ২১০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়।

৬) বিশেষ প্রযুক্তির ব্যবহার : এই গাড়িতে একটি বিশেষ প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে যার ফলে স্যাটেলাইট দ্বারা এই গাড়ির ট্র্যাক করা যাবে ও বিপদকালে গাড়ির মধ্যে থেকেই আপৎকালীন সংবাদ দেওয়া যাবে। এই গাড়ির উচ্চ নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহৃত গাড়ির নিরাপত্তাকেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছাপিয়ে যাবে।

[aaroporuntag]
এরকম উচ্চ নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য জনিত গাড়ির ড্রাইভার নিয়োগ প্রক্রিয়াও যে ভিন্ন রকম হবে তা বলাই বাহুল্য। এই গাড়ির ড্রাইভার নিয়োগ করবার জন্য তাই মুকেশ আম্বানি বেসরকারি সংস্থা দের দায়িত্ব দেন সেই বেসরকারি সংস্থায় লোক খুঁজে সেই লোককে ট্রেনিং দিয়ে তারপর মুকেশজির কাছে পাঠায়। এরপর সেই ড্রাইভারকে হাজারো টেস্ট দিতে হয়। সেই টেস্টগুলিতে পাশ করলে তবেই চাকরি পাকা হয়। তবে এত কসরৎ করে যিনি গাড়ির ড্রাইভারের চাকরিতে নিযুক্ত হবেন তার পারিশ্রমিক ও কিন্তু কোন অংশে কম নয়। গাড়ির ড্রাইভারের বেতন মাসিক দু লক্ষ টাকা, যা দেশের একাধিক বড় বড় কর্পোরেট সংস্থার কর্মীদের চাইতেও বেশি।

Advertisements