নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রকৃতির খামখেয়ালীপনা, আবহাওয়া যেকোনো মুহূর্তে পরিবর্তন হতে পারে তা আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাই। স্বাভাবিক জীবনের কার্যকলাপকে আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনা নিমেষে বদলে ফেলে। তবে এই আবহাওয়া বিজ্ঞানকেই ভীষণভাবে রপ্ত করে ফেলেছেন ভারতের এক মানুষ, যাকে অনেকেই বলে থাকেন তার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় বশ করার ক্ষমতা রয়েছে। তিনি হলেন মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র। সুপারম্যান না হলেও তিনি বর্তমানে ভারতে ‘সাইক্লোন ম্যান’ নামে পরিচিত।
কিন্তু কেন এমন উপাধি বা নামের অধিকারী হলেন তিনি? মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র ২০০৮ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কিত একের পর এক যা পূর্বাভাস দিয়েছেন তার প্রতিটিই অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছে। যে কারনেই তিনি আজ এই নামে পরিচিতি লাভ করেছেন। ফাইলিন, হুদহুদ, তিতলি, মেকুনু, ফণি ইত্যাদি ঘূর্ণিঝড়গুলির ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে সঠিক পূর্বাভাস দিয়ে তিনি রাজ্যগুলিকে সতর্ক করতে সক্ষম হয়েছেন।
অন্যদিকে গত বছর আম্ফান ঘূর্ণিঝড়ের সময় আগাম পূর্বাভাস এবং ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথ নিয়ে সঠিক বর্ণনা দেওয়ার কারণে তিনি রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে প্রশংসিত হন। কেননা এই পূর্বাভাসের কারণেই সতর্ক হতে পেরেছিল রাজ্যগুলি। আগাম সর্তকতা হিসাবে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল তারা। আর এই সকল পদক্ষেপের কারণে প্রাণ বেঁচে ছিল বহুজনের।
গত ২৭ বছর ধরে এই ‘সাইক্লোন ম্যান’ আবহ বিজ্ঞানের সাথে যুক্ত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি ভারতের আবহ বিজ্ঞানের প্রধানের ভূমিকায় রয়েছেন। আর তার এই জ্ঞানের কারণেই দীর্ঘ ২০০৮ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কিত আগাম সর্তকতা দেশের প্রতিটি আঞ্চলিক আবহাওয়া দপ্তর দিতে সক্ষম হচ্ছে। এমনকি তাঁর এই জ্ঞানের কারণে ভারত ছাড়াও ভারতের পার্শ্ববর্তী দেশগুলিও ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্কবার্তা পেয়ে থাকে। যে কারণে বঙ্গোপসাগর, আরব সাগর ও উত্তর ভারত মহাসাগরের ক্রান্তীয় দেশগুলিও তার এবং ভারতের প্রশংসা করে থাকে। তবে তিনি সবসময়ই তার এমন সঠিক বার তার কারণ হিসেবে উন্নত প্রযুক্তিকেই কৃতিত্ব দিয়ে আসছেন।
১৯৯২ সালে তার প্রথম কর্মজীবন শুরু হয় পুনের আবহাওয়া অফিসে। পরে বেশ কয়েকদিন তিনি কাজ করেছিলেন ওড়িশার বালাসোরে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনে। এরপর ২০০৮ সাল থেকে তিনি নিযুক্ত রয়েছেন ভারতীয় আবহ বিজ্ঞানের আঞ্চলিক শাখার প্রধান হিসাবে। আর এই পথে বসার পর থেকেই তিনি এখনও পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ, গতিবেগ এবং সময়কাল সম্পর্কে নির্ভুল আপডেট দিয়ে আসছেন।
[aaroporuntag]
বর্তমানে তিনি ২০১৯ সালের আগস্ট মাস থেকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য ভারতীয় আবহবিজ্ঞান দফতরের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে ২০১৩ সালে WMO-এর এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য হিসেবেও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।