নিজস্ব প্রতিবেদন : বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের হলেন ভারতের রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রির কর্ণধার মুকেশ আম্বানি। বিশ্বের ধনকুবেরদের তালিকায় এক থেকে দশে থাকা এই ধনকুবের ভারতের মতো দেশে কার্যত রাজার হালে বসবাস করেন। তার বাড়ি গাড়ি, পোশাক-আশাক সমস্ত কিছুই একটি রাজ পরিবারের তুলনায় কম নয়। ব্লগবার্গের মুকেশ আম্বানি এশিয়ার ধনীতম ব্যক্তি এবং তার বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ হল ৭৬.৩ বিলিয়ন ডলার।
তার এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির তালিকায় রয়েছে তার নিজের বাড়ি। যে বাড়িটির নাম আটলান্টিক মহাসাগরের নামে নামকরণ করা হয়েছে আন্তিলিয়া। পরিবারে মাত্র পাঁচ সদস্যের জন্য এই বাড়ি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ১০০ কোটি পাউন্ড। ২৭ তলা এই বাড়িতে কি নেই! নিজের বাড়িকে মনের মতো সাজিয়ে তুলেছেন আম্বানি।
সাউথ মুম্বইয়ের আল্টামাউন্ট রোডের উপর অবস্থিত এই বাড়িটির মোট উচ্চতা হলো ৫৭০ ফুট। বাড়িটি ২৭ তলা হলেও তার উচ্চতা ৪০ তলা বাড়ির সমান। আম্বানির এই ২৭ তলা বাড়িতে রয়েছে হেয়ার স্পা, স্যালোঁ, বলরুম, সুইমিংপুল, যোগা স্টুডিও, ডান্স স্টুডিও, আইসক্রিম পার্লার এবং ৫০ আসন বিশিষ্ট ব্যক্তিগত থিয়েটার।
থিয়েটারের ঠিক উপরের তলায় রয়েছে মনোরম একটি বাগান। এই বাড়ির প্রথম ছয় তলা কেবলমাত্র গাড়ি পার্কিং করার জন্য। যেখানে একসাথে ১৬৭ টি গাড়ি পার্কিং করা যায়। বাড়িটির একতল থেকে অন্যতল জ্বালা যাওয়ার জন্য রয়েছে মোট ৯টি এলিভেটর। এই এলিভেটরগুলি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্য ভাগ রয়েছে। পরিবারের সদস্য এবং আগত অতিথিরা আলাদা আলাদা এলিভেটর ব্যবহার করে থাকেন। এই অট্টালিকার ছাদে রয়েছে তিনটি হেলিপ্যাড।
মুকেশ আম্বানির এই রাজপ্রাসাদটি তৈরি করেছে শিকাগোর পারকিন্স এন্ড উইল কোম্পানি এবং অস্ট্রেলিয়ার লেনটন হোল্ডিং কোম্পানি। বাড়িটি এতটাই মজবুত ভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে করে ভূমিকম্পের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৮ হলেও কোন ক্ষতি হবে না। বাড়িটির পুরো নকশা করা হয়েছে স্ফটিক, মার্বেল এবং মুক্ত দ্বারা তৈরি সূর্য এবং পদ্মের দুটি নকশা দিয়ে। মুকেশ আম্বানির এই বাড়িটি বিশ্বের দ্বিতীয় ব্যয়বহুল বাসস্থান। প্রথম তালিকায় রয়েছে ইংল্যান্ডের বাকিংহাম প্যালেস।
মুকেশ আম্বানি এবং তার পরিবারকে পূজা-অর্চনা করার জন্য এই বাড়ি ছেড়ে যেতে হয় না। কারণ বাড়িতেই একটি বিশাল মন্দির রয়েছে। সেখানে প্রায় প্রতিদিনই পূজার্চনা হয়ে থাকে। যে কারণে আম্বানি পরিবারের সদস্যরা খুব একটা জরুরী না পড়লে নিজের অট্টালিকার বাইরে বেরই হন না।
আম্বানি পরিবারের মতোই তাদের অতিথিদেরও এই অট্টালিকায় থাকার সুবন্দোবস্ত রয়েছে। গরমের সময় দিল্লী-মুম্বইয়ের তাপমাত্রা স্পর্শটুকু করতে পারেনা আম্বানি পরিবারের সদস্যদের। এই রাজপ্রাসাদে রয়েছে একটি স্নো-রুম বা বরফ ঘর। যে কারণে তারা বাড়িতে বসেই পাহাড়ের বরফ ঠান্ডা আবহাওয়া অনুভব করে থাকেন।
আম্বানি পরিবারের পাঁচ সদস্য হলেন মুকেশ আম্বানি ও তার স্ত্রী নিতা আম্বানি, তাদের পুত্র সন্তান আকাশ আম্বানি এবং তার স্ত্রী শ্লোকা মেহতা আম্বানি। আর তাদের পরিবারের সব থেকে খুদে সদস্য মুকেশ ও নীতা আম্বানির নাতি পৃথ্বী আম্বানি। তবে আম্বানির পরিবারে মাত্র পাঁচজন সদস্য সংখ্যা হলেও তাদের এই বিশাল অট্টালিকা এবং পরিবারের সদস্যদের দেখভালের জন্য প্রায় ৬০০ জন কর্মচারী রয়েছেন বলে জানা যায়।