নিজস্ব প্রতিবেদন : রিক্সার পরিবর্তে যখন রাস্তায় প্রথম টোটো নেমেছিল, তখন সবার মধ্যেই সখ ছিল চড়ার। ধীরে ধীরে তা একঘেয়েমিতে পরিণত হয়েছে, টোটো নিয়ে নানান মানুষের নানান অভিযোগ তৈরি হয়েছে, তবে একটি হনুমানের কাছে তো টোটো সেই নতুন। আর সেই নতুন জিনিস দেখেই তাতে তার চড়ার সখ হয়েছে। সখ হওয়া মাত্রই তা পূরণের জন্য সটান টোটোতে চেপে পড়ল ওই হনুমান। তারপর আর নামার নামগন্ধ নাই।
বীরভূমের রামপুরহাটের ছ’ফুঁকো মাছ বাজারের কাছে এমনই আজব ঘটনাটি ঘটেছে এক টোটোওয়ালার সাথে। ওই টোটোওয়ালা যখন নিজের ব্যবসার জন্য বাজারের কাছে টোটো এনে দাঁড় করান সেই সময়ই দেখা যায় একটি হনুমান হঠাৎই তার টোটো সিটে চেপে বসেন। বারবার টোটো থেকে নামার জন্য বলা হলেও কোনমতে হনুমানটি নামেনি।
পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ওই টোটো চালক কলা এবং অন্যান্য খাবার ওই হনুমানের হাতে তুলে দেন। কিন্তু সেই সব খাবার দিয়েও কোনভাবেই মন ভোলানো যায় নি হনুমানটির। বরং হাতের কাছে বেশি বেশি খাবার পেয়েও ওই হনুমানটি তা ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছিলেন। এই সময় ওই টোটো চালক ভাবেন হয়তো হনুমানটি টোটো চেপে ঘোড়ার সখ হয়েছে। তখন তিনি হনুমানটিকে টোটোতে চাপিয়েই শহরের বিভিন্ন প্রান্ত ঘোরাতে শুরু করেন। যদিও ঘন্টার পর ঘন্টা টোটো চেপে শহর ঘোরার পরেও টোটো থেকে নামতে নারাজ দেখা যায় ওই হনুমানকে।
অন্যদিকে এই পরিস্থিতির পাল্লায় পড়ে ওই টোটো চালকের টোটোতে কোন যাত্রী চাপেন নি। হনুমানের ভয়ে যাত্রীরা ওই টোটো এড়িয়ে যান। যে কারণে প্রায়ই একটা দিন ওই টোটো চালকের পরিশ্রম বৃথা যায়। রোজগার ছাড়াই তাকে বাড়ি ফিরতে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে। তবে হনুমানটি কেবলমাত্র সখের বশে নাকি অন্য কোন শারীরিক দুর্বলতা বা অসুস্থতার কারণে এমনটা করেছেন তা জানা যায়নি।
রামপুরহাটের স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাদা হোসেন জানিয়েছেন, “সকাল থেকে দেখছি ওই টোটোয় চেপে বসে আছেন হনুমানজি। নামার কোন নামগন্ধ নেই। এমনকি তাকে খাবার দেওয়া হলেও, টোটোতে করে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরানো হলেও নামতে চান নি। বুঝতে পারা যাচ্ছে না তার কোনো শারীরিক অসুবিধা রয়েছে কিনা।”
তবে সে যাই হোক এই ঘটনাকে দেখে এলাকার বহু বাসিন্দাই বেশ মজা নিয়েছেন। ওই টোটো চালকও একদিনের রোজগার হারালেও হনুমানকে নিজের টোটো চাপিয়ে শহর ঘোরাতে পেরে বেশ খুশি।