নিজস্ব প্রতিবেদন : বুধবার সকালে প্রয়াত হন বর্ষীয়ান অভিনেতা দিলীপ কুমার। ৯৮ বছর বয়সে বর্ষীয়ান এই অভিনেতার প্রয়াণে চলচ্চিত্র জগতের একটা যুগের অবসান ঘটলো। তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্টজনেরা।
দিলীপ কুমার ১৯৪৪ সালে সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেন। একসময় বলিপাড়ায় সুদর্শন ছিলেন এই তরুণ অভিনেতা। বলি পারায় তিনি দীর্ঘ ৫৪ বছর নিজের অভিনয়ের মধ্য দিয়ে সেরা সেরা ছবির নিদর্শন রেখে গেলেন। ‘নায়া দর’, ‘মুঘল-ই-আজম’, ‘দেবদাস’, ‘রাম অওর শ্যাম’, ‘আন্দাজ’, ‘মধুমতী’ এবং ‘গঙ্গা-যমুনা’র একাধিক হিট ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাকে।
দিলীপ কুমার ১৯২২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন পাকিস্তানের পেশোয়ারে। তার আসল নাম মহঃ ইউসুফ খান। বাবা ছিলেন মহঃ সারোয়ার খান। দিলীপ কুমারের বাবা ছিলেন একজন ফল ব্যবসায়ী। দিলীপ কুমার কিশোর অবস্থায় মুম্বই থেকে পুনে পাড়ি দিয়ে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একটি ক্যান্টিনে কাজ করা শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেখানে কাজে মন না বসার পরে আবার তিনি সেখান থেকে ফিরে আসেন। ফিরে এসে বাবার সাথে ব্যবসায় হাত লাগালে তার সাথে পরিচয় হয় সাইকোলজিস্ট ডাঃ মাসানির। তিনি আবার দিলীপ কুমারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন বোম্বে টকিজ-এর মালিকের সাথে। আর এখান থেকেই তার অভিনয় জগতে পা রাখা।
বোম্বে টকিজ-এর মালিকের সাথে সাক্ষাতের পরেই তিনি ‘জোয়ার ভাঁটা’য় অভিনয় করার সুযোগ পান। আর এই প্রথম ছবিতে অভিনয় করার সময়ই তিনি তার নাম বদলে রেখেছিলেন দিলীপ কুমার। সে সময় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নাম বদলানো ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। জনপ্রিয়তা লাভের জন্য একাধিক অভিনেতা-অভিনেত্রী নিজেদের নাম বদলে ছোট এবং আকর্ষণীয় নাম রাখতেন। তবে দিলীপ কুমারের নামবদলের পিছনে ছিল অন্য একটি কারণ।
দিলীপ কুমার ইউসুফ খান থেকে দিলীপ কুমার হয়েছিলেন তার বাবার ভয়ে। তার বাবা সবসময়ই অভিনয় পেশার বিরোধিতা করতেন। আর সেই ভয়েই ইউসুফ খান, ইউসুফ খান থেকে হয়ে যান দিলীপ কুমার। দিলীপ কুমার নিজে তার নাম বদল এবং তার বাবার বিষয়ে জানিয়েছেন নিজের আত্মজীবনীতে। দিলীপ কুমার আত্মজীবনীতে জানিয়েছেন, তার বাবার ভয়েই তিনি তার নাম পরিবর্তন করেছিলেন। আর এই নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছিলেন দেবিকা রানি। যদিও পরে তার বাবা তার অভিনয়ের কাজকে মেনে নিয়েছিলেন এবং প্রশংসা করেছিলেন।