নিজস্ব প্রতিবেদন : ‘পৃথিবীতে কোন কাজ ছোট নয়, অসম্মানের নয়’। এই মন্ত্রকে সামনে রেখেই ঝাড়ুদারের কাজ বেছে নিয়েছিলেন আশা কান্দালা। আর এই কাজ চালিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই আরও উচ্চতর চাকরির সন্ধানে অক্লান্ত পরিশ্রম। সেই অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল স্বরূপ ঝাড়ুদার থেকে ডেপুটি কালেক্টর হয়ে উঠলেন এই আশা কান্দালা। তার জীবনের এই উন্নতির আগাগোড়া পুরোটাই অনুপ্রেরণায় ভরা।
জীবনের কঠিন পথে এমন সফলতা অর্জন করা আশা কান্দালা হলেন রাজস্থানের যোধপুরের বাসিন্দা। বিয়ের পর তিনি দুই সন্তানের মা হন। তবে স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় বাপের বাড়িতে চলে আসেন বছর আটেক আগে বিচ্ছেদের পর। দুই সন্তানকে বাপের বাড়িতেই শুরু হয় লালন পালন। তবে বেশিদিন রোজগারহীন অবস্থায় বাপের বাড়িতে বেশিদিন থাকতে সংকোচ হচ্ছিল তার।
এই সংকোচ বোধ থেকেই তিনি নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য গ্রাজুয়েশন সম্পূর্ণ করেন। তারপরই শুরু হয় চাকরির প্রস্তুতি। পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া এবং সন্তানদের মানুষ করার জন্য প্রয়োজন অর্থ। UPSC পরীক্ষার প্রস্তুতি চালানোর পাশাপাশি অর্থের তাগিদে বিভিন্ন সংস্থায় তিনি চাকরির আবেদন করেন। প্রথমে বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন এবং পরে যোধপুর মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের সুইপারের জন্য শূন্যপদ বের হলে সেখানেও তিনি আবেদন করেন।
সুইপারের পদে আবেদন করার পরিপ্রেক্ষিতে ফলাফল বের হলে তিনি সেই চাকরি পান। বেসরকারি সংস্থার চাকরি ছেড়ে সুইপারের চাকরিতে যোগ দেন তিনি। তবে এরই মাঝে ২০১৯ সালে তিনি RAS-এর মেইনস পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তবে সেই পরীক্ষার ফলাফল বের হতে দেরি হওয়ায় সাফাই কর্মী হিসাবে কাজ করে নিজের সংসার টানতে শুরু করেন তিনি। গত দু’বছর ধরে এই কাজই করেছেন। আর দীর্ঘ সময় পর সেই পরীক্ষার ফলাফল বের হতে দেখা যায় গ্রুপ এ’তে ভালো ফলাফল করেছেন।
প্রথমদিকে তিনি কোন পদে নিযুক্ত হবেন তা ঠিক হয়নি। তবে আশা দেবী আশা করেছিলেন ডেপুটি কালেক্টর পদের তার নিয়োগ হতে পারে। তবে এখানেও তিনি তার পদ নিয়ে কোনোরকম দ্বিধাবোধ করেননি, বরং জানিয়েছেন যে কোনো পদ হলেই চলবে।
যোধপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসক জানিয়েছেন, “দিন কয়েক আগেই পৌরসভার সুইপারের পদ স্থায়ী করা হয়েছে। এরই মাঝে হঠাৎ শুনতে পাই আমাদের একজন সুইপার RAS পাস করেছেন। পরীক্ষার ফলাফল বের না হওয়ায় তিনি এই কাজ করছিলেন। উনার সাফল্য সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।”
Inspiration !
Asha Kandra , who raiser her two children alone, worked as a sweeper in Jodhpur Municipal Corporation and has now cleared the Rajasthan Administrative Service Examination and will be posted as a Deputy Collector.
Hats off to her indomitable spirit ? pic.twitter.com/I6dRBPtlCE— VVS Laxman (@VVSLaxman281) July 17, 2021
আশা দেবীর এমন সফলতা এখন দেশজুড়ে ভাইরাল। তার এই সফলতার খবর এখন পৌঁছে গিয়েছে ক্রিকেট মহল থেকে তারকাদের অন্দরেও। ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার ভিভিএস লক্ষ্মণ তার এই সফলতা নিয়ে টুইট করে কুর্নিশ জানিয়েছেন।