হাড়গিলে রাস্তার ফাঁদে দুবরাজপুর, সারাই নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর, ভুগছেন বাসিন্দারা

Laltu Mukherjee

Updated on:

লাল্টু : রাস্তা তো নয়, যেন মারণ ফাঁদ। এমনই বেহাল দশা দুবরাজপুর শহরের উপর দিয়ে যাওয়া রানীগঞ্জ-মোড়গ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের। খানাখন্দে ভরা এই রাস্তার কারণে অতিষ্ঠ দুবরাজপুর শহরের সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে এই রাস্তা সারাই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

বছরের পর বছর ধরে দুবরাজপুর এলাকার পাওয়ার হাউস মোড় থেকে পাহাড়েশ্বর পর্যন্ত এই রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ে আছে। বৃষ্টি হলে রাস্তার খানাখন্দ ভরে যায় জলে। ফলে রাস্তা বোঝা দায় হয়ে পড়ে। আবার অন্যদিকে রাস্তার জল শুকিয়ে গেলে ধুলোয় ভরে যায় এলাকা, আর এই দুইয়ের মাঝে পড়েই সমস্যায় পড়েছেন শহরবাসীরা। রাস্তা এতটাই খারাপ যে যখন-তখন উল্টে যাচ্ছে টোটো বা অটো, আবার কখনো কখনো রাস্তা খারাপের কারণে খারাপ হয়ে যাচ্ছে লরি বা ডাম্পার। প্রত্যেকেরই একটাই চাওয়া ভালো হয়ে উঠুক জাতীয় সড়ক।

তবে এই রাস্তা সারাই নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, তারা বীরভূমের দুই সাংসদকে এই রাস্তা সারাইয়ের জন্য জানিয়েছেন। তারা লোকসভায় সরব হয়ে রাস্তা সারাইয়ের দাবি তুলবেন। বীরভূম জেলা তৃণমূল সহ-সভাপতি মলয় মুখার্জি দাবি করেছেন, “ভোটের আগে মোদি থেকে অমিত শাহ সবাই বহুবার আনাগোনা করেছেন। কত বড় বড় বুলি বলে গেল। কিন্তু আজ তাদের দেখা নেই। এই সকল উন্নয়নের দিকে চোখ লাগানোর নামগন্ধ নেই।” যদিও জানা যাচ্ছে এই রাস্তা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যখন দুবরাজপুর বিধানসভায় তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন তখন থেকেই। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, “যখন আমাদের দুবরাজপুরে তৃণমূলের এমএলএ ছিলেন তখন তিনি এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।”

অন্যদিকে দুবরাজপুর বিধানসভার বর্তমান বিজেপি বিধায়ক অনুপ কুমার সাহা দাবি করেছেন, “দিন কয়েক আগেই বীরভূম জেলা প্রশাসন ভবনে বীরভূমের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে যে প্রশাসনিক বৈঠক হয় সেই বৈঠকে আমি উপস্থিত ছিলাম এবং সেখানে আমি এই রাস্তা সারাই করার জন্য মাননীয় সাংসদ শতাব্দি রায়কে অনুরোধ জানিয়েছি। এখন তার উচিত লোকসভায় এনিয়ে কথা বলা, যাতে করে কেন্দ্র সরকার এই রাস্তা মেরামতি করা নিয়ে উদ্যত হয়।”

অন্যদিকে দুবরাজপুর পৌরসভার প্রশাসক পীযূষ পান্ডে রাজনীতি করার জন্য এই রাস্তাটি মেরামত করা হচ্ছে না বিজেপি, এমনটা অভিযোগ করলে বিধায়ক অনুপ কুমার সাহা সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জানান, “বর্তমান কেন্দ্র সরকারের আমলে গোটা ভারত জুড়ে সড়ক ব্যবস্থা সবথেকে উন্নত। সুতরাং এই অভিযোগ কাম্য নয়। কেবলমাত্র রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার কারণে অনেক কাজ আমরা করতে পারছি না। দুবরাজপুর থেকে খয়রাশোল যাওয়ার রাজ্য সড়কের অবস্থা শোচনীয়, সেই বিষয় নিয়ে তো তারা কোনো কথা বলছেন না।”

তবে রাজনৈতিক নেতাদের এই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের গেরোয় পরে দিনদিন শোচনীয় অবস্থা হচ্ছে আমজনতার। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই রাস্তা দিয়ে আমাদের প্রতিনিয়ত জীবন নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। পাশাপাশি রাস্তার ধারে ব্যবসা করার সময় যেন জীবন নিয়ে বসে রয়েছি ব্যবসার জন্য। রাজনৈতিক এই সকল বাদানুবাদ ছেড়ে আমরা রাস্তা সারাই চাই, আসল উন্নয়ন চাই।