কুঁড়েঘরের তরতাজা যুবকের চিকিৎসায় প্রয়োজন ২০ লক্ষ টাকা, সাহায্য প্রার্থনা পরিবারের

Shyamali Das

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের পাঁচড়া গ্রামের চন্দননগর কলোনির উত্তম ব্যাপারী নামের এক দিন আনা দিন খাওয়া ঘরে বাসা বেঁধেছে জটিল রোগ। তার ছেলে তরতাজা যুবক চৈতন্য ব্যাপারী কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যেখান থেকে কিডনি ট্রান্সফার ছাড়া আর ফিরে আসার কোনো উপায় নেই। এমত অবস্থায় চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন খরচ হবে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা। আর এই টাকার অঙ্ক শুনেই মাথায় হাত পরিবারের সদস্যদের। প্রশাসনিক, সাধারণ মানুষ অথবা কোন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্য না পেলে নিরুপায় ভাবে, চোখের সামনে হারাতে হবে তাদের ছেলেকে।

চৈতন্য ব্যাপারী জানিয়েছেন, মাস তিনেক আগে তার হঠাৎ গা বমি বমি ভাব শুরু হয়। খাওয়া-দাওয়ার প্রতি কোন রকম ইচ্ছা ছিল না। তারপর স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করানোর পর কিছুটা হলেও সুস্থ হন। ইতিমধ্যেই হঠাৎ টাইফয়েড হয়। তারপর বিভিন্ন চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে ওঠেন। পরে আবার সেই গা বমি বমি ভাব শুরু হয়। এমত অবস্থায় যে সকল পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো হয়েছিল তাতে কিডনির সমস্যার প্রসঙ্গ উঠে আসে। তারপর তারা কোনরকম বিলম্ব না করে বর্ধমান যান চিকিৎসার জন্য। সেখানেই জানানো হয় দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে।

তবে এই কথা শুনে তারা যে হাত গুটিয়ে বসে ছিলেন তা নয়। নিজেদের যেটুকু সময় ছিল সেই সময় নিয়ে বাঁচার রসদ খুঁজতে তারা ছুটে যান ব্যাঙ্গালোর। সেখানেও দেখানো হয় চিকিৎসকদের, করানো হয় বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকেরাও কোনরকম বিকল্প পথ দেখাতে পারেননি। তাদের কথা অনুযায়ী, পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে ডায়ালাইসিস করা হলে পাঁচ থেকে ছয় মাস বাঁচতে পারবেন চৈতন্য। আরন্য উপায় হলো একমাত্র কিডনি ট্রান্সফার করা।

চিকিৎসকদের কথা অনুযায়ী, যদি কিডনি ট্রান্সফার করার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে প্রথমেই খরচ হবে দশ লক্ষ টাকা। পরবর্তীতে ওষুধ এবং অন্যান্য সামগ্রীর পিছনে প্রতি মাসে খরচ হবে ১৫-২০ হাজার টাকা। সর্বসাকুল্যে চিকিৎসকদের থেকে চিকিৎসার খরচ সংক্রান্ত যে হিসাব পাওয়া গিয়েছে তাতে মনে করা হচ্ছে ২০ লক্ষ টাকার নিচে চৈতন্যকে বাঁচানো অসম্ভব।

চৈতন্য ব্যাপারীর বাবা একজন দিনমজুর। তিনি দৈনিক কাজের উপর নির্ভর করে সংসার চালান। তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতে রয়েছে কেবল মাত্র এক চিলতে একটি মাটির বাড়ি, খড় দিয়ে ছাওয়ানো। ঘরের সদস্য চারজন। বাবা মা এবং ভাই বোন। এমত অবস্থায় ওই পরিবারটি এই বিপুল পরিমাণ টাকার অঙ্কের কথা শুনে হতাশ হয়ে পড়েছেন। পাশাপাশি হতাশ হয়ে পড়েছেন চিকিৎসকদের ভবিষ্যৎবাণী শুনে।

চৈতন্য ব্যাপারীর বয়স এখন মাত্র ২৫ বছর। পড়াশোনার ক্ষেত্রেও বেশ মেধাবী। বর্তমানে চৈতন্য বাংলা অনার্সের ছাত্র। তবে অর্থাভাবে রেগুলারে পড়াশোনা করতে পারেনি। কাজ চালিয়ে যাওয়া এবং পড়াশোনা করে নিজের স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্য নিয়ে এসে সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের ওপেন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়। সেখান থেকেই প্রথম বর্ষে পাস করে এখন সে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

চৈতন্য এবং তার পরিবারের সদস্যদের কাতর আকুতি তাদের ছেলেকে বাঁচিয়ে তোলার জন্য। এই জন্য তারা প্রশাসনিকভাবে হোক অথবা সাধারণ মানুষদের একত্রিত প্রচেষ্টা অথবা কোন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যদি তাদের পাশে দাঁড়ান তাহলে তারা উপকৃত হবেন বলে জানিয়েছেন। চৈতন্যর পাশে কেউ যদি দাঁড়াতে চান তাহলে তিনি সরাসরি তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন 7908555805 নম্বরে ফোন করে।