নিজস্ব প্রতিবেদন : একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল মে মাসের ২ তারিখ প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর পুনরায় রাজ্যে ফিরেছে শাসকদল তৃণমূল। অন্যান্য বছরের তুলনায় আসন সংখ্যা বাড়িয়ে তারা ফিরলেও জট লেগেছে বেশ কয়েকটি জায়গায়। এই সকল জটের মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো মুখ্যমন্ত্রীর ভোটে হেরে যাওয়া। আর এই পরাজিত প্রার্থী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রীত্ব বজায় রাখতে হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভোটে জিতে আসতে হবে।
যে কারণে শাসকদল তৃণমূল প্রতিনিয়ত রাজ্যের যে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে এখনো ভোট গ্রহণ সম্ভব হয়নি সেই সকল কেন্দ্রে দ্রুত উপনির্বাচনের দাবি করছেন। তবে শাসকদল উপনির্বাচনের দাবি করলেও নির্বাচন কমিশন এ নিয়ে এখনো তেমন কোনো স্পষ্ট বার্তা দেয় নি। যে কারণে স্বাভাবিকভাবেই স্নায়ুর চাপ বাড়ছে শাসক দলের অন্দরে। আর এবার এই স্নায়ুর চাপকে আরও বাড়াতে পদ্ম শিবির আটটি কারণ দেখিয়ে রাজ্যে এখনই উপনির্বাচন নয় এমনটাই দাবি করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে, এমনটাই জানা যাচ্ছে সূত্র মারফত। অন্যদিকে আবার উপনির্বাচনের দাবিতে বৃহস্পতিবারই তৃণমূলের এক প্রতিনিধি দল ইলেকশন কমিশনের দ্বারস্থ হবে দুপুর তিনটের সময়।
পদ্ম শিবিরের তরফ থেকে যে ৮টি কারণ দেখানো হয়েছে সেগুলি হল
১) রাজ্যে এখন করোনা পরিস্থিতি চলছে।
২) রাজ্যে বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন। গণপরিবহনের ক্ষেত্রে রয়েছে কম সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলাচলের অনুমতি।
৩) সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসেই করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
৪) পুজো এবং উৎসবের মাস হল অক্টোবর মাস।
৫) পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্য কোভিড বিধি জারি করে বিজেপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
৬) করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রয়োগ করে দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, দেবশ্রী চৌধুরী সহ একাধিক বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
৭) করোনার কারণে এই রাজ্যে ১২২টি পৌরসভার নির্বাচন এখনো আটকে রয়েছে।
৮) রাজ্যে যে সরকার রয়েছে তার যথেষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সেই জায়গায় এখনই সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন না হলেও সরকার টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে কোনো রকম সংকট নেই। সুতরাং উপনির্বাচন এখনই অপরিহার্য নয়।
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভের পর নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পরাজিত হয়েই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে গত ৬ মে শপথ গ্রহণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো হিসেব অনুযায়ী আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে তাকে যেকোনো একটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে আসতে হবে তার আসন টিকিয়ে রাখার জন্য।