নিজস্ব প্রতিবেদন : জনপ্রিয় গায়ক বাবুল সুপ্রিয় সঙ্গীতজগৎ থেকে রাজনীতিতে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একজন সাংসদ হওয়ার পাশাপাশি হয়ে ওঠেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। এক সময় উঠতে বসতে যিনি তৃণমূলকে ‘টিএমছিঃ’ বলে কটাক্ষ করতেন তিনি শনিবার বারবেলা নাম লেখালেন তৃণমূলে।
বিজেপিতে থাকাকালীন একাধিক সময় এই বাবুল সুপ্রিয়কে তৃণমূল ছাড়াও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আষ্টেপিষ্টে বিঁধতে দেখা গিয়েছে। এমনকি একুশে নন্দীগ্রামে পরাজয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী পদে বসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘সিভিক মুখ্যমন্ত্রী’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। এছাড়াও একাধিকবার ‘দিদির চটি’-কে বিঁধতে দেখা গিয়েছে তাকে।
প্রাক্তন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ছিলেন অতি সক্রিয়। যে কারণে সময়ে অসময়ে তাকে তৃণমূলকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিঁধতে দেখা যেত। এমনকি একুশে মন্ত্রিত্ব যাওয়ার পরেও বাবুল সুপ্রিয় রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিয়েও তৃণমূলের বিরুদ্ধেই সরব হতে দেখা গিয়েছে।
এরই মধ্যে হঠাৎ তিন-চার দিনের মধ্যে তার মত পরিবর্তন হয় বলেই তিনি জানিয়েছেন। রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার পর তার মেয়েকে একটি স্কুলে ভর্তি করা নিয়ে ডেরেকের সাথে কথা হওয়ার সময় নাকি ডেরেক ও’ব্রায়েন তাকে তৃণমূলে আসার কথা জানান। আর সেই সুযোগ পেয়ে তিনি তা হাতছাড়া করেন নি।
তবে মনে পড়ে, ‘কহোনা পেয়ার হ্যায়’ খ্যাত এই গায়ক বাবুল সুপ্রিয় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ‘দিদির চটি’-কে বিঁধে বিজেপির থিম সং তৈরি করেছিলেন। সেই থিম সং নিজেই গেয়েছিলেন। আর সেই থিম সং এতটাই জনপ্রিয়তা লাভ করে যে এখনো সমানতালে চলছে সেই গান। অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা বিজেপির সেই থিম সং ‘এই তৃণমূল আর না’-র রূপকারই আজ তৃনমূলে।
দু’বারের সাংসদ তথা সাত বছরের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এইভাবে বেঁকে বসা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানান প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। গেরুয়া শিবিরের অন্তরে কেউ কেউ তার এমন সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক বলে দাবি করেছেন, কেউ আবার ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘শনি’ এমন নানান কটাক্ষ করেছেন। অন্যদিকে তৃণমূলের যারা এই তার বিরুদ্ধে একদিন মুখ খুলতেন তারাই তাকে সমাদরে স্বাগত জানিয়েছেন। অন্যদিকে সিপিআইএম এবং কংগ্রেসের তরফে এই সিদ্ধান্তকে ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত বলেও দাবি করা হয়েছে।
তবে সে যাইহোক তৃণমূলে আসার পর গায়ক এই রাজিনীতিকের থেকে এবার নতুন কোনো গান শোনা যাবে? সেই অপেক্ষায় বাংলার আপামর জনতা।