ডাকাতদের ভয়ে গ্রামছাড়া হলেও রয়ে গেছে চক্রবর্তী পরিবারের দুর্গাপুজো

লাল্টু : আনুমানিক ৪০০ বছর আগেকার কথা। এলাকায় ছিল ঘন জনবসতি। তবে তার সঙ্গে সঙ্গে ছিল চোর-ডাকাতদের দৌরাত্ম্য। আর এই চোর-ডাকাতদের দৌরাত্ম্যের কারণে এলাকার বাসিন্দারা অন্যত্র চলে যান। কেউ চলে যান লোকপুরে, কেউ আবার কড়িধ্যা, কেউ আবার অন্যত্র। তবে বাসিন্দারা অন্যত্র চলে গেলেও এখানকার চক্রবর্তী পরিবারের দুর্গাপুজো থেকে গিয়েছে স্বমহিমায়।

এই দুর্গাপুজো হল বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের অন্তর্গত লোকপুর থানার জঙ্গলে ঘেরা মানকর গ্রামের দুর্গাপুজো। বর্তমানে এই দুর্গা ঠাকুরের জন্য কংক্রিটের মন্দির থাকলেও আগে এখানে তালপাতার মন্দির ছিল বলে জানা গিয়েছে চক্রবর্তী পরিবারের সদস্যদের সূত্রে। তবে তালপাতার মন্দির হওয়ার কারণে বৃষ্টি পরলে প্রতিমার গায়ে জল পড়তো। বৃষ্টির জলে প্রতিমার ক্ষতি হওয়া দেখে কমলপুরের আড্ড পরিবারের এই দুর্গা মন্দির নির্মাণ করিয়ে দেন।

এই গ্রামে যে আগে জনবসতি ছিল তা এখনো টের পাওয়া যায়। সেই সকল মানুষদের বসবাসের বিভিন্ন নিদর্শন এখনও রয়ে গিয়েছে এই গ্রামে। অন্যদিকে এখানকার দুর্গাপুজোর প্রতিমার বৈশিষ্ট্য হিসেবে উঠে এসেছে তা হল, সরস্বতী সঙ্গে থাকেন গণেশ এবং লক্ষ্মীর সঙ্গে থাকেন কার্তিক।

এই প্রতিমার এমন বৈশিষ্ট্যের কারণ হিসেবে কথিত রয়েছে, জঙ্গলে ঘেরা এই জায়গায় লক্ষ্মী, কার্তিক, সরস্বতী, গণেশ একসঙ্গে খেলা করছিলেন। সেই সময় কেউ এসে যাওয়াতেই তারা যে যেখানে ছিলেন সেখানেই থেকে যান।

জঙ্গলে ঘেরা এই জায়গায় বছরভর কেউ না থাকলেও পুজোর সময় চক্রবর্তী পরিবারের সদস্যরা এখানে হাজির হন এবং চারদিন ধরে এখানে চলে পুজো। এরপর পুজো শেষ হয়ে গেলে দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জনের পর যে যার জায়গায় চলে যান। প্রতিবছর এই পুজোকে কেন্দ্র করে পার্শ্ববর্তী গ্রামের বহু মানুষের আগমন ঘটে।