শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : ধূমপান আমাদের সমাজের একটি দীর্ঘস্থায়ী ব্যাধি। এই সমাজের গোড়ার ব্যাধির ফলস্বরূপ মৃত্যু হয় প্রতি বছর কত মানুষের কিন্তু তারপরেও সচেতন নয় জনসাধারণ। সিগারেটের ব্যবহার দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। সরকারি সমস্তরকম সতর্কীকরণ ব্যর্থ হয়েছে।
ধূমপানকারী থেকে শুরু করে যারা ধূমপান যাঁরা করেন তারা সবাই বোধহয় একটা বিষয় সম্পর্কে জেনেই থাকবেন সিগারেটের প্যাকেটের ওপরে থাকা ভয়াবহ সব চিত্রগুলি। ক্যানসার আক্রান্ত সব বিভৎস মুখের চিত্রগুলি দেখলেই গা শিউরে ওঠে যেন। মূলত এগুলির একটাই উদ্যেশ্য মানুষজনকে সচেতন করা। ওই ছবিগুলি দেখে অন্তত মানুষ যেন সচেতন হতে পারে যে ধূমপান ঠিক কতটা মারাত্মক, প্রানহানিকারক হতে পারে তারই ইঙ্গিত ওই ছবিগুলি।
১ ডিসেম্বর থেকে সিগারেটের প্যাকেটের ওপর ওই ছবিগুলি আরও ভয়ঙ্কর আকারে আসতে চলেছে। প্রায় প্রত্যেক বছরই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কোনো না কোনো পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশের জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে থাকে।
তার মধ্যে ২০১৮ সালে ‘টোবাকো কজেস পেনফুল ডেথ ‘ স্লোগানের মাধ্যমে সচেতন করা থেকে শুরু করে, এই খারাপ অভ্যেস ত্যাগ করানোর জন্য প্রথমে প্যাকেটের ৫০ শতাংশ জায়গা জুড়ে ভয়াবহ সব ক্যানসারের চিত্র দেওয়া হয়, ২০২০ সালের পর আবার তা বদলে প্যাকেটের ৮৫ শতাংশ অংশ জুড়ে ওই ছবিগুলো করা হয়। যাতে করে এমন ভয়ঙ্কর সব ছবি দেখে মানুষের হুঁশ ফেরে। সরকারের দাবি অনুযায়ী, এই সব ছবি দেখে নাকি মানুষের অনেকের মধ্যে থেকে ধূমপানের অভ্যাস ছেড়ে গিয়েছে।
বিভিন্ন মতানুযায়ী, প্রতিনিয়ত ধূমপানকারীরা এই সব ছবি দেখার ফলে মনের ওপর ওই প্রভাব পড়বে এবং তা কার্যকরী হতে পারে। প্রতিটি ছবিই প্যাকেটের ওপর ওইভাবেই সেট করা হয় থাকে, যাদের প্রত্যেকের মেয়াদ হয় এক বছর। এই বছরের ছবির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩০ নভেম্বর । তাই সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পরবর্তী ক্ষেত্রে আরও ভয়াল সব ছবি দিয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চলছে।
২০০৮ সালে হওয়া রুলসকে বদলে ফেলে ২০১৮ সালে নতুন করে সিগারেট অ্যান্ড টোবাকো প্রোডাক্টস রুলস করে প্যাকেটের ওপর এইসব ছবির মাধ্যমে বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ করা হয়। এমনকি বহু মানুষ গত কয়েক বছরে টোল ফ্রি নম্বরে ডায়াল করে এই বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন।
আমরা আশা করতে পারি ভবিষ্যতে এই ভয়াবহ নেশার কবল থেকে বহু মানুষ সচেতন হয়ে ধূমপান ত্যাগ করতে সক্ষম হবেন।