নিজস্ব প্রতিবেদন : গত বুধবার আমাদের সকলকে ছেড়ে চলে যান জনপ্রিয় সঙ্গীত জগতের তারকা বাপ্পি লাহিড়ী। এই বাপ্পি লাহিড়ী জনপ্রিয় সঙ্গীত জগতের তারকা ছাড়াও ছিলেন একজন রাজনীতিক। ২০১৪ সালে তিনি রাজনীতিতে পা দিয়েছিলেন বিজেপির হাত ধরে। তবে নির্বাচনের পর আর তাকে রাজনীতির মঞ্চে দেখা যায়নি। কিন্তু কেন?
বিজেপির হয়ে যখন বাপ্পি লাহিড়ী শ্রীরামপুর কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, সেই সময় বাংলায় বিজেপির যেমন আধিপত্য ছিল না। তবে এই কেন্দ্রে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নেমে কড়া টক্কর দিয়েছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রায় ৩ লক্ষ ভোট পেয়েছিলেন তিনি।
বিজেপির প্রার্থী হওয়ার পর বাপ্পি লাহিড়ী হুড খোলা জিপে বিভিন্ন জায়গায় প্রচারে যেতেন। উঠা নামা করতে অসুবিধা হওয়ার কারণে একটি ফোল্ডিং সিঁড়ি রাখা হতো। গোটা দিনে প্রচারে শেষে হোটেলে ফিরে তার পছন্দের খাবার ছিল ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এবং কফি। এরপর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মধ্যরাত পর্যন্ত আড্ডা মেরে ভোরের দিকে ঘুমাতে যেতেন। তবে এত সবের মাঝেও কখনো বিরক্ত হতে দেখা যায়নি এই সঙ্গীত শিল্পীকে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনটাই জানিয়েছেন তৎকালীন এজেন্ট সুবীর নাগ।
তিনি যখন প্রচারে রাস্তায় নামতে সেই সময় রাস্তার চারদিকে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যেত বলে জানিয়েছেন সুবীর নাগ। তিনি এটাও জানিয়েছেন, মাত্র ১০০ মিটার পথ যেতে সময় লাগবে তিন ঘন্টা। কাতারে কাতারে লোক বাপ্পি লাহিড়ীকে ফুল ছুঁড়ে সংবর্ধনা দিতেন। তখন রাজ্যে বিজেপির সংগঠন বলতে কিছু না থাকলেও ৩ লক্ষের কাছাকাছি ভোট পেয়ে তিনি নজর কেড়েছিলেন।
তবে এমন তারকা একজন ব্যক্তিকে সাংসদ হিসাবে গড়ে তুলতে না পেরে নিজের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন সুবীর নাগ। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন বাপ্পি লাহিড়ীর আর ফিরে না আসার কারণ। এই বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, আসলে তিনি অন্য জগতের মানুষ থাকার কারণেই আর রাজনীতিতে ফিরে আসেননি। তবে তিনি ছিলেন একেবারে অমায়িক লোক। পরে কয়েক বছর সুবীর নাগের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। ফোনাফনি হতো দুজনের মধ্যে। ব্যস্ততার কারণে বাপ্পি লাহিড়ী কখনো ফোন ধরতে না পারলে ঘুরিয়ে আবার তাকে ফোনও করতেন।