নিজস্ব প্রতিবেদন : বৃহস্পতিবার সকালটা আর পাঁচটা দিনের মতো ছিল না। সাতসকালেই খবর আসে টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায় মধ্যরাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন। তার এই প্রয়াণে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে চলচ্চিত্র জগৎ থেকে সাধারণ মানুষ।
তবে শেষ জীবনে অভিষেক চট্টোপাধ্যায় অনেক দুঃখ, কষ্ট অভিমানকে আঁকড়ে ধরেই জীবন অতিবাহিত করেছেন। আর সেই সকল দুঃখ-কষ্ট অভিমানকে সঙ্গে নিয়েই তিনি চলে গেলেন। জীবনের প্রথম ছবি থেকেই অভিষেক বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি টলিউডে জায়গা করতে এসেছেন। সেই সময় তাপস পাল, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মতে অভিনেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করে নিজেকে আলাদাভাবেই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এক বছরের মধ্যেই একের পর এক ছবির অফার পেয়েছিলেন এবং একাধিক ছবিতে অভিনয় করার পাশাপাশি সব ছবিই বক্স অফিসে ছিল হিট।
অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৮৬ সালে পথ ভোলা ছবির মধ্য দিয়ে। এরপর ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে একের পর এক ছবি হিট করে। সেই সকল ছবিগুলির মধ্যে ছিল অমর প্রেম’, ‘ওরা চারজন’, ‘হারাণের নাতজামাই’, ‘পাপী’, ‘তুফান’ ইত্যাদি। পরে ২০০০ সাল পর্যন্ত কম করে ৫০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। যেগুলির মধ্যে নামকরা ছিল ‘মায়ের আশীর্বাদ’, ‘মেজো বউ’, ‘সিঁথির সিঁদুর’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘লাঠি’, ‘আলো’, ‘চৌধুরী পরিবার’। এর পাশাপাশি ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘দহন’ ছবিতে অভিনয় করেও নজর কেড়েছিলেন তিনি।
কিন্তু এরপর ভালো অভিনেতা হয়েও নায়কের চরিত্রে অভিনয়ের পরিবর্তে তার কাছে আসতে শুরু করে সহ-অভিনেতার চরিত্রে অভিনয়ের অফার। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ক্ষোভ উগড়ে দেন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি জানান টলিউডের রাজনীতির শিকার হয়েছেন। অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন টলিউডের সুপারস্টারদের বিরুদ্ধেও। সেই বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে।
তবে সিনেমা থেকে সরে গেলেও অভিষেক চট্টোপাধ্যায় অভিনয় জগৎ কে আঁকড়ে ধরেই শেষ জীবন কাটিয়ে দিলেন। সিনেমা জগৎ ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি যে সকল ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন সেই সকল ধারাবাহিকগুলি হল টাপুর টুপুর’, ‘আঁচল’, ‘মোহর’, ‘চোখের তারা তুই’, ‘ইচ্ছে নদী’, ‘অন্দরমহল’, ‘কুসুম দোলা’, ‘ফাগুন বউ’, ‘খড়কুটো’ ইত্যাদি।