রামপুরহাটের বগটুই কাণ্ডে অভিযুক্ত মালিক, ৯ দিন ধরে সাজা পেল পোষ্য

Shyamali Das

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : রামপুরহাটের বগটুই গ্রাম সবসময় শিরোনামে। গত সপ্তাহের সোমবার এই গ্রামে এক উপ-প্রধান খুনকে কেন্দ্র করে গণহত্যার খেলায় মাতে। যে গণহত্যায় উপপ্রধান ছাড়াও মৃত্যু হয় তরতাজা ৯ জনের। এদের মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা এবং শিশু।

এই গণহত্যার অন্যতম অভিযুক্ত হিসাবে যাকে এখনো পর্যন্ত শনাক্ত করা হয়েছে তিনি হলেন মৃত উপপ্রধান ভাদু শেখের ছায়াসঙ্গী লালন শেখ। এই লালন শেখের সামনেই সোমবার রাতে বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় ভাদু শেখের এবং তারপরেই জ্বলতে শুরু করে বগটুই। যে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় ৯ জনের।

গণহত্যার কান্ড ঘটে যাওয়ার পর যখন লালন শেখ টের পেতে শুরু করেন অভিযুক্তদের তালিকায় তার নাম উঠে এসেছে সেই সময় থেকেই তিনি ফেরার হয়ে যান। তিনি ফেরার হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তার বাড়িও মানুষশূন্য হয়ে পড়ে। তবে সবাই ফেরার হয়ে গেলেও বাড়িতে গৃহবন্দি অবস্থায় আটকে থাকে একটি প্রাণ। সেটি হল লালন শেখের পোষ্য জার্মান শেপার্ড।

যে পোষ্য সবসময় মানুষের আশেপাশে ঘোরাফেরা করত, আদর করে তাকে খাবার তো, আবার সেও অন্যদের আদরে ভরিয়ে দিতো, সেই পোষ্য টানা ৯ দিন ধরে গৃহবন্দী। গৃহবন্দি থাকার কারণে এই কয়েকটা দিন মানুষের সংস্পর্শে পর্যন্ত আসতে পারেনি ওই জার্মান শেপার্ড। এ যেন অভিযুক্ত মালিকের সাজা পেতে হল তার পোষ্যকে।

বগটুই কাণ্ডে তদন্তভার পাওয়ার পর সিবিআই ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। সেই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার লালন শেখের বাড়ি থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হানা দেয় সিবিআই আধিকারিকরা। সেই সময় সিবিআই আধিকারিকরা লালন শেখের বাড়ির তালা ভাঙতেই বেরিয়ে আসে লালন শেখের পোষ্য।

৯ দিন ধরে মানুষ দেখতে না পেয়ে, মানুষের সংস্পর্শে আসতে না পেরে এই সারমেয়টির এমন পরিস্থিতি হয়েছিল যে এতদিন পর হঠাৎ মানুষ দেখেই তারা অচেনা হলেও তাদের পায়ে লুটিয়ে পড়ে। সে যেন কিছু বোঝাতে চায়। এমনকি এই ঘটনা দেখে সিবিআই আধিকারিকরাও মর্মাহত হয়ে পড়েন। এরপর সিবিআই আধিকারিকরা ওই সারমেয়টিকে খাবার এবং জল দিয়ে গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দেন।