লাল্টু : থাইল্যান্ডের ব্যাংককে আয়োজিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে জেলা তথা রাজ্যকে গর্বে ভরিয়ে দিল বীরভূমের দুবরাজপুর শহরের তিতাস মুখার্জি। আন্তর্জাতিক স্তরে যেখানে শয়ে শয়ে প্রতিযোগীদের অংশগ্রহণ, সেখান থেকে এইভাবে পদক ছিনিয়ে নিয়ে আলাদা নজির গড়লেন তিতাস।
তিতাস বীরভূমের দুবরাজপুর শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডে বসবাস করেন। মাত্র ১১ বছর বয়সী এই বঙ্গ তনয়া বর্তমানে শ্রী শ্রী সারদেশ্বরী বিদ্যমন্দির ফর গালর্স স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। এই বঙ্গ তনয়া একের পর এক জায়গায় পারফরম্যান্স করে প্রথম স্থান অধিকার পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশের মাটিতে এমন পারফরম্যান্স করার সুযোগ পায়। থাইল্যান্ডের আয়োজিত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করার ফলে সে আবার পরবর্তীতে দুবাই যাবে পারফরম্যান্স করতে।
গত বছর ডিসেম্বর মাসের ১৮ তারিখ থেকে ১০ দিনের জন্য হিন্দুস্তান আর্ট এন্ড মিউজিক সোসাইটির তরফ থেকে বর্ধমান ও কলকাতায় একটি ভারত সংস্কৃতি উৎসবের আয়োজন করা হয়। সেই উৎসবে বর্ধমানে তিতাস যায় এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। সেখানে হাজার হাজার প্রতিযোগীদের মধ্যে তিতাস রবীন্দ্র নৃত্য এবং আবৃত্তিতে প্রথম স্থান অধিকার করে। এর পরেই বিদেশের মাটিতে তার পারফরম্যান্স দেখানোর জন্য দরজা খুলতে শুরু করে।
এই ভারত সংস্কৃতি উৎসব পশ্চিমবঙ্গের দুটি জায়গা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় আয়োজিত হয়। সেই সকল জায়গা থেকে যারা প্রথম স্থান অধিকার করে তাদের নিয়ে হরিয়ানা সরকার একটি ২১ জনের মেধাতালিকা তৈরি করে। এর পরেই তিতাস সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন প্রতিযোগীদের থাইল্যান্ডের ব্যাংককের রাজ মঙ্গলা ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত ২৯ তম গ্লোবাল কম্পিটিশনে পারফরম্যান্স করার সুযোগ করে দেওয়া হয়। তিতাস যেহেতু ওই ২১ জনের তালিকাভুক্ত, তাই তার সমস্ত খরচ বহন করে হরিয়ানা সরকার।
থাইল্যান্ডে এই প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয় ১৪ মে। প্রতিযোগিতার ফলাফল বের হয় পরদিন, যেখানে ঘোষণা করা হয় তিতাস আবৃত্তি এবং রবীন্দ্র নৃত্যে ভারতের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এমন প্রথম স্থান অধিকার করার ঘোষণা তিতাসের কাছে যেন অবিশ্বাস্য হয়ে দাঁড়ায়। তিতাস তার এই জয়ের জন্য তার নৃত্য গুরু সুরেশ দাস এবং আবৃত্তি গুরু নুপুর মুখার্জী অক্লান্ত পরিশ্রম, বাবা ও মা তন্ময় মুখার্জি এবং রঞ্জিতা মুখার্জির উৎসাহকেই তার সাফল্যের চাবিকাঠি বলে জানিয়েছেন তিতাস।