নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্য এখন তোলপাড় শাসক দলের একাধিক নেতা মন্ত্রীদের দুর্নীতি নিয়ে। এই সকল দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য তোলপাড় হওয়ার পাশাপাশি অস্বস্তিতে ফেলছে রাজ্য সরকারকে। তবে এসবের মাঝেই বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী অদ্ভুতভাবে নিজের মাসিক খরচের হিসাব পেশ করলেন। তিনি তার হিসাবে দেখিয়েছেন, মাসে তার ৯৪ হাজার টাকা খরচ।
তৃণমূলের এই বিধায়ক টোটোর জন্য খ্যাত। পাশাপাশি তিনি একজন লেখক। তবে যখন রাজ্যজুড়ে নেতা-মন্ত্রীদের অঢেল সম্পত্তির, সারমেয়র জন্য ফ্ল্যাট ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সেই সময় নিজের আয়-ব্যয়ের হিসাব সোশ্যাল মিডিয়ায় পেশ করেছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী।
এই আয়-ব্যয়ের হিসাব পেশ করার সময় তিনি ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘বিপিএল এমএলএ বেত্তান্ত’। সেখানে তিনি লিখেছেন, “আমার বিধায়কগিরির এক বছর পুর্ন হয়ে গেছে। দু’কাঠা জায়গা কেনার মতো টাকা এক বছর ধরে চেষ্টা করেও জমিয়ে উঠতে পারলাম না। তাই বাধ্য হয়ে আছি বাঁশবেড়িয়ার ‘একভাড়া ঘরে’। অনেকে বলে বিধায়কদের নাকি লাখ লাখ কামাই!.. আমি আগে এক বধির বিদ্যালয়ে রান্নার কাজ করতাম। সরকারি চাকরি তাই, সর্বশেষ- কেটে কুটে যে মাইনে তুলেছিলাম সেটা ছত্রিশ হাজারের মতো। দেখতে গেলে আজ আমার রোজগার তার চেয়ে অনেক কম।”
বিধায়ক হিসেবে তিনি যে হিসাব পেশ করেছেন তাতে লিখেছেন, ভাতা পান ২১, ৮৭০ টাকা। তিনি তিনটি স্ট্যান্ডিং কমিটির মেম্বার। যেখানে ৬টি মিটিংয়ের মধ্যে চারটিতে উপস্থিত থাকলে ৬০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। সবমিলিয়ে দাঁড়ায় ৮১, ৮৭০ টাকা।
এরপর তিনি জানিয়েছেন, হুগলি থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে টোটো চালানো যায় না বলে বাধ্য হয়ে একটি গাড়ি কিনেছেন। কারণ মাসে তাকে আটবার যাতায়াত করতে হয়। যে গাড়ি কিনেছেন তার জন্য প্রতি মাসে ১০০০০ টাকা ইএমআই দিতে হয়। দিনে মোটামুটি ১০ লিটার পেট্রোল পুড়ে। যার খরচ হাজার টাকা। অর্থাৎ মাসে খরচে দাঁড়াচ্ছে ৩০০০০ টাকা। ড্রাইভারের মাইনে ১৪ হাজার টাকা। দুটি বিধায়ক অফিসের জন্য মাসে দুজন স্টাফকে দিতে হয় ৭০০০ টাকা করে ১৪ হাজার টাকা।
এছাড়াও ইলেক্ট্রিক, খবরের কাগজ, চা মুড়ি ও আনুসঙ্গিক খরচ হিসাবে মাসে খরচ হয়ে থাকে ৬০০০ টাকা। বাড়িতে বারবার লোকজন আসা এবং তাদের চা ও মাঝেমধ্যে ভাত ডাল দেওয়ার জন্য একজন কাজের মেয়ে তিনি রেখেছেন, যাকে মাসে ৫০০০ টাকা মাইনে দিতে হয়। এর পাশাপাশি আরও কিছু খরচ মিলে মাসে তার ৯৪ হাজার টাকা খরচ হয়। তিনি দাবি করেছেন এসবের পরিপ্রেক্ষিতে তার মাসে অন্ততপক্ষে ১২০০০ টাকা সঞ্চয় থেকে খরচ হয়ে থাকে।