অনেক যুগ আগের কথা, যখন পোশাকের ধরন ছিল ভিন্ন। স্টাইলিং ছিল এখনকার থেকে অনেক আলাদা। তখন লিঙ্গভদে তৈরি করা হতো পোশাক। তখন পুরুষেরা যে ধরনের পোশাক পরতেন, নারীদের সেই রকম পোশাক পরার অনুমতি ছিল না। তবে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। এখন পুরুষ ও মহিলা সকলেই নিজেদের পোশাক নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকেন।
মহিলারা এখন পুরুষদের মত পোশাক পরে থাকেন, আবার অনেক পুরুষও অনেক সময় তথাকথিত মহিলাদের পোশাক নিয়ে অনেক এক্সপেরিমেন্ট করে থাকেন। তবে একটা জিনিস আমরা অনেকেই লক্ষ্য করেছি যেটা হলো, মহিলাদের শার্টের বোতাম থাকে বাঁদিকে এবং পুরুষের শার্টের বোতাম থাকে ডান দিকে। তবে এর বাস্তবসম্মত কারণ নেই। কিন্তু প্রায় ১৮৫০ সাল থেকে এই নিয়মই চলে আসছে কোনো কারণ ছাড়াই।
প্রাচীন কালে উচ্চবিত্ত মহিলাদের ঘরে তাঁদের সাজিয়ে দেওয়ার জন্য ও পোশাক পরিয়ে দেবার জন্যেও পরিচারিকা নিয়োগ করা থাকত। তাই উচ্চবিত্ত বাড়ির মহিলারা কখনওই নিজে নিজে জামাকাপড় পরতেন না। তাই মনে করা হয় পরিচারিকাদের সুবিধার্থে হয়তো এমনটা করা হয় থাকতে পারে। তবে এই বিষয়ের একটি বহুল প্রচলিত কারণ আছে। কারণটি হলো মহিলাদের শার্টের বাঁ দিকে বোতাম থাকলে তাদের পোশাক পরতে সুবিধা হয়। মহিলারা নাকি ডান হাত দিয়ে চটজলদি বোতাম আটকে নিতে পারেন। তবে বাম হাত দিয়ে সেটা করতে হলে তা অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়াতো।
অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, পুরুষদের পোশাকে ডান দিকে বোতাম থাকারও একটি কারণ আছে। প্রাচীন কালে বেশিরভাগ পুরুষদের কাছে থাকতো নানা অস্ত্র। আর ডান হাত দিয়ে চটজলদি অস্ত্র বের করে আনতে সুবিধা হতো।আর পোশাকের ডান দিকের বোতাম তাড়াতাড়ি ডান হাত দিয়ে খুলে পুরুষেরা সেখান থেকে লুকনো অস্ত্র বের করে আনতে পারতেন। এই কারণে নাকি পুরুষদের জামার বোতাম ডান দিকে থাকে।
এই বিষয়ে আরেকটি কথা প্রচলিত আছে যে, ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন নাকি এই বিষয়টির জন্য দায়ী। নেপলিয়নের বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায় যে, তিনি তার ওয়েস্টকোটের মধ্যে সবসময় হাত ঢুকিয়ে রাখতেন। এটি দ্বারা নাকি তার আভিজাত্য প্রকাশ পেত। আর এই কারণে অনেক ফরাসি মহিলারা সেই সময় নেপলিয়নকে নিয়ে হাসাহাসি করতেন। সেই সঙ্গে সমালোচনাও করতেন। আর এই কারণে নেপোলিয়ন মহিলাদের জন্য শার্ট তৈরি করেন, যার বোতাম গুলি রকাহ হয় পুরুষদের শার্টের বোতামের ঠিক উল্টো দিকে। আর তখন এভাবেই পোশাক পরতে হত মহিলাদের। যাতে তাঁরা আর নেপোলিয়ন কে নিয়ে হাসাহাসি কটাক্ষ না করতে পারেন।