ভারতে যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য ভারতীয় রেলওয়ে (Indian Railway) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একদিন রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে স্তব্ধ হয়ে যাবে সাধারণ মানুষের জীবন। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ এই রেল পরিষেবার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যান। অনেকের মধ্যেই রেল ব্যবস্থা সম্পর্কে নিয়ে মনে নানা প্রশ্ন থাকে। রেল নিয়ে মানুষের মনে অসীম কৌতুহল। অনেকেই হয়তো জানেন না রেল লাইনে পাথর বসানোর কারণ? না জানলে জেনে নিন।
রেললাইন গুলি স্থাপন করার জন্য প্রথমে একদম নিচে মজবুত কংক্রিটের স্ল্যাব বসানো হয়। এই স্ল্যাব গুলোকে বলা হয় স্লিপার। এর ঠিক ওপর থাকে পাথর। যাকে ভৌগলিক পরিভাষায় ব্যাসল্ট বলা হয়। এর নিচে থাকে মাটির দু খানা লেয়ার। প্রথম স্তরে থাকে স্বাভাবিক মাটি, তার ওপর থাকে কিছু অতিরিক্ত মাটি।
রেল লাইনের ট্র্যাকে রাখা পাথর গুলির নাম ব্যাসল্ট। এটি কিন্ত এক বিশেষ ধরনের পাথর। যদি এই ব্যাসল্ট পাথরের পরিবর্তে অন্য কোনো গোলাকার পাথর ব্যবহার করা হতো তবে সেই পাথর গুলো পিছলে সরে যেতে পারে। আর এই পাথর গুলি গোলাকার না হওয়ায় সেগুলো একে অপরের সাথে লেগে থাকে, সরে যায় না। ফলে খুব সহজেই ট্রেন চলাচলের সময় ট্রেনের ওজন সামলাতে পারে এই পাথর গুলো।
একটি ট্রেনের যা ওজন তা শুধু স্লিপারের ধরে রাখার ক্ষমতা নেই। সেই কারণে এর উপর ব্যাসল্ট পাথর রাখা হয়। ট্র্যাকের ওপর যখন ট্রেন যায় তখন লাইন কাঁপতে থাকে। আর এই পাথরগুলো সেই কম্পনকে ছড়িয়ে দেয়, এর ফলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা কমে যায়। তাছাড়া প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে রেললাইনের গোড়া থেকে মাটি সরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই পাথরগুলি থাকায় সেই সমস্যারও সমাধান হয়।
এই পাথরের আর একটি উপকারিতা আছে। এই ব্যাসল্ট পাথরের জন্য ট্রেন লাইনে কখনোই গাছপালা এবং ঘাস জন্মাতে পারে না, আর জন্মালেও বেড়ে উঠতে পারেনা। তাই একসাথে এতগুলি সমস্যার সমাধানের জন্য রেল লাইনে ব্যাসল্ট পাথর ব্যবহার করা হয়। তবে এই পাথরগুলোর ক্ষয় হওয়ার প্রবণতা থাকে, আর এই কারণে নির্দিষ্ট সময় অন্তর রেলকর্তৃপক্ষ এই পাথরগুলো পরিবর্তন করতে থাকে।