গরু বাঁধার দড়ি বিক্রি করতেন লতিফ, কীভাবে হয়ে উঠলেন কোটি কোটি টাকার মালিক

Shyamali Das

Published on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : গরু পাচার মামলার তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই আব্দুল লতিফের (Abdul Latif) নাম উঠে আসছে। ২০২২ সালের ৭ আগস্ট সিবিআই যে চার্জসিট দিয়েছে সেই চার্জশিটে নাম জড়িয়েছে আব্দুল লতিফের। এমনকি তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় ওয়ারেন্ট জারি হলেও তাকে হাতের নাগালে আনতে পারেননি সিবিআই আধিকারিকরা। শান্তিনিকেতনে যে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প রয়েছে তার অদূরেই রয়েছে আব্দুল লতিফের বিশাল মার্বেল শোরুম। আবার ইলামবাজারের গরুহাটের কাছে থাকা সুখবাজারে রয়েছে আব্দুল লতিফের পেল্লাই বাড়ি। কালো কাঁচ লাগানো গাড়িতে অনুগামীদের নিরাপত্তা বলয়ে মাঝে মাঝেই তাকে আসতে দেখা যায় বলে সূত্রের খবর।

Advertisements

আব্দুল লতিফ যেভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠলেন তা সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানাতে পারে। অবশ্য আব্দুল লতিফের ক্ষেত্রেই এমন চিত্রনাট্য জড়িয়ে রয়েছে তা নয়। এই ধরনের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেই এমন চিত্রনাট্যের খোঁজ পাওয়া যায়। ঠিক যেমনটা দেখা গিয়েছিল রাজু ঝাঁয়ের (Raju Jha) ক্ষেত্রে। সামান্য একজন গাড়ির খালাসি থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক। ঠিক একই রকম কাহিনী জড়িয়ে রয়েছে আব্দুল লতিফের ক্ষেত্রেও।

Advertisements

আব্দুল লতিফ এক সময় অভাবের তাড়নায় গরু বাঁধার দড়ি বিক্রি করতে আসতেন ইলামবাজারের সুখবাজার হাটে। সেই সময় তিনি ছিলেন নাবালক। নাবালক অবস্থা থেকেই সামান্য টাকা রোজগারের জন্য এইভাবে ব্যবসায় নামেন। তবে এরপরই টাকার লোভে তিনি জড়িয়ে পড়েন গরু পাচারে। তারপরই উল্কার গতিতে উত্থান হতে শুরু করে লতিফ ওরফে হিঙ্গুলের।

Advertisements

সুখ বাজার হাটে গরু বাঁধার জন্য দড়ি বিক্রি করার সময় ২০১০ সালে এনামুল হকের নজরে আসেন আব্দুল লতিফ। এরপর ইলামবাজার হাট থেকে মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশ বর্ডার পর্যন্ত গরু পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব বর্তায় আব্দুল লতিফের উপর। সিবিআই যে চার্জশিট পেশ করেছে তাতে আব্দুল লতিফ কেবলমাত্র গরু পাচারের সঙ্গে জড়িত তা নন, পাশাপাশি গরু হাট তার নিয়ন্ত্রণে ছিল বলেও জানা যাচ্ছে।

আর এই গরু পাচার এবং গরু হাট নিয়ন্ত্রণ করেই প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করতে শুরু করেন আব্দুল লতিফ। বোলপুরে তৈরি করেন বিশাল মার্বেল শোরুম এবং গোডাউন। এই শোরুম এবং গোডাউনের পিছনেই রয়েছে বিঘার পর বিঘা জমি। সুখবাজারের চৌপাহারি এলাকায় পাঁচ একরেরও বেশি জমিতে তৈরি করেছেন হ্যাচারি পোল্ট্রি ফার্ম। এছাড়াও রয়েছে ইলামবাজার থেকে দুবরাজপুর যাওয়ার হাইওয়ের উপর বিশাল গাড়ি শোরুম এবং সার্ভিসিং সেন্টার, জয়দেব রোডের উপর রয়েছে ১৫ বিঘা জমি, এছাড়াও তিনি তৈরি করছেন পেট্রোল পাম্প থেকে হোটেল সহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি তিনি নিজেকে পাথর ব্যবসায়ী এবং বলে দাবি করেন। এছাড়াও তিনি অবৈধ বালির ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত বলে জানা যায়।

Advertisements