যুগ অনেক বদলেছে। কিন্তু কিছু কিছু জায়গার মানুষের মধ্যে কুসংস্কার (Superstition) এখনো মনের অন্তঃকরনে বসে গেছে। কোনো ভাবেই তাদের মন থেকে এই কুসংস্কার (Superstition) দূর করা যায় না। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের একটি গ্রামে এমনি এক কুসংস্কারাচ্ছন্ন গ্রামের খোঁজ পাওয়া গেলো। আর তাদের চিন্তা ধারা দেখলে চমকে হবেন আপনি ।
কুসংস্কার (Superstition) যুক্ত এই বাঁটুল গ্রাম। যদিও এই গ্রাম সাধারণ মানুষের জন্য ভক্তি এবং বিশ্বাসের মিশেল ছাড়া আর কিছুই নয়। সেই গ্রামেই আছে একটি আশ্চর্য পুকুর। যেটি মোটা পুকুর নামে পরিচিত। আর এই মোটা পুকুর কিন্তু বেজায় জনপ্রিয়, স্বাস্থ্য উদ্ধারের বাসনায় দূর দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ এই পুকুরে ডুব দিতে আসেন। এখানে ডুব দিলে নাকি রোগা মানুষ মোটা হয়। স্নানের সময় এক মুঠি চাল পুঁটলি করে শোলায় বেঁধে ভাসিয়ে দিতে হয়। জলে চাল ফুলে ওঠে। দাবি করা হয়, এতেই ভক্তের স্বাস্থ্য ভাল হয়। নানা ধরনের রোগবালাই থেকে মুক্তি ঘটে।
হাওড়ার বাগনানের বাঁটুল গ্রামে রয়েছে চণ্ডী মন্দির। তার পাশেই দেবী চণ্ডীর পুকুর। লোকমুখে সেই পুকুরই এখন মোটা পুকুর নামে পরিচিতি পেয়েছে। প্রতি রবিবার অসংখ্য ভক্তের ভিড় জমে। কোনও রবিবার পূর্ণিমা হলে ভিড় উপচে পড়ে। লোকমুখে প্রচার রয়েছে, এই পুকুরে ডুব দিলে নাকি মহিলাদের রোগ ভাল হয়, তাই মেয়েদের ভিড় বেশি।
স্থানীয়দের কথায় পুকুরের বয়স একশো বছরেরও বেশি। পুকুরের ধারে রয়েছে পাকুড় গাছ, সেখানে তেল-হলুদ-সিঁদুর মাখিয়ে পুজো হয়। ওই তেল-হলুদ শরীরে মেখে মানুষ মোটা পুকুরে স্নান করেন। জনশ্রুতি রয়েছে, এখানে স্নান করলে নাকি শিশুদের রিকেট রোগ সেরে যায়। সন্তান কামনায় এবং চাকরি পাওয়ার আশায় অনেকে স্নান করেন। ঠাকুরের কাছে মানত করেন।
হাওড়া ছাড়াও বাংলার নানান জেলা থেকে সব ধর্মের মানুষ এখানে আসেন। স্নানের পর জামাকাপড় পুকুর পাড়ে ফেলে দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। ভক্তরা ইচ্ছে পূরণের নানাভাবে পুজো দেন, অনেকে চালকুমড়ো, নুনের বস্তা ইত্যাদি দিয়েও পুজো দেন।