নিজস্ব প্রতিবেদন : চূড়ান্ত নাটক শেষে সোমবার ভোর পাঁচটা নাগাদ সিবিআইর (CBI) হাতে গ্রেফতার হন মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা (Jibankrishna Saha)। তার গ্রেপ্তার হওয়ার পর কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে আসার মত ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে একের পর এক মানুষ ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন খোদ বাবা বিশ্বনাথ সাহা।
বিশ্বনাথ সাহা (Biswanath Saha) ছেলে জীবন কৃষ্ণের বিরুদ্ধে তাকে মারধর, গালিগালাজ সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়া ইত্যাদি নানান অভিযোগ তুলেছেন। এই সকল সামান্য অভিযোগ ছাড়াও আরও রহস্যজনক একটি ঘটনা জড়িয়ে রয়েছে জীবনকৃষ্ণ সাহা এবং তার বাবার মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততায়। জীবনকৃষ্ণ সাহার সঙ্গে বাবা এবং অন্যান্যদের সম্পর্ক কিভাবে তলানিতে ঠেকলো।
মুর্শিদাবাদ ছাড়াও জীবনকৃষ্ণ সাহা এবং তার বাবার বীরভূমের সাঁইথিয়া, সিউড়ি সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে। এই সকল সম্পত্তি মূলত তাদের সম্পর্কের তিক্ততার পিছনে রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আসলে জীবন কৃষ্ণ সাহার বাবা বিশ্বনাথের দুটি বিয়ে। দ্বিতীয় বিয়ের পর তাদের সন্তানদের সঙ্গেও তিক্ত সম্পর্ক তৈরি হয় জীবন কৃষ্ণের। এমনকি ২০১৫ সালে জীবনকৃষ্ণ সাহার সৎ ভাই বিবেকানন্দের রহস্যজনক দেহ উদ্ধার হয় সাঁইথিয়ায়। এখন সেই মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত নিয়েও সরব হচ্ছেন জীবন কৃষ্ণের সৎ মা গায়ত্রী সাহা এবং সৎ বোন চুমকি সাহা।
চুমকি সাহা দাবী করেছেন, বাবা ছেলের সুসম্পর্ক কোনদিনই ছিল না। সম্পত্তির জন্যই জীবন কৃষ্ণ সাহা সবসময় বাবা বিশ্বনাথের বিরোধিতা করতেন। বাবাকে মারধর করতেন এমনকি গদির ব্যবসায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন। বহু প্রয়োজনীয় কাগজ-নথি পুড়িয়ে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ। এর পাশাপাশি চুমকি তার দাদা জীবন কৃষ্ণকে কুলাঙ্গার বলেছেন এবং তার যাবজ্জীবন জেল অথবা ফাঁসি চেয়েছেন।
বিশ্বনাথ সাহা অর্থাৎ জীবন কৃষ্ণের বাবা একইভাবে তাকে মারধর এবং তার বিরুদ্ধে নানান অত্যাচারের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। তবে জীবন কৃষ্ণের রাজনৈতিক দাপটের কথা মাথায় রেখে কোনদিন কিছু তারা বলেননি, সব মুখ বুজে সহ্য করেছেন বলে জানিয়েছেন। এখন তারা এই সকল দাবি দাওয়া নিয়ে লড়াই চালাতে চান।