যারা সত্যিকারের ভোজনরসিক তারাই খাবারের সঠিক মূল্যায়ন করতে জানেন। কোন খাবারের সাথে কোন খাবার খেলে আসল স্বাদ বোঝা যায়, তা একমাত্র ভোজন রসিকরাই উপলব্ধি করতে পারবেন। অনেকেই হয়তো সুস্বাদু মোগল খাবারের সাথে রুমালি রুটির (Rumali Roti) যুগলবন্দীকে বেশ পছন্দ করেন। তবে কি আছে এই পাতলা, ফিনফিনে রুটিতে যাতে মজে আছে আপামোর ভোজন রসিকরা?
এমন অনেকেই আছেন যারা লুচির সাথে কষা মাংস ত্যাগ করে, কষা চিকেন ও রুমালি রুটি (Rumali Roti) খেতে বেশি পছন্দ করেন। এতে খাবারের স্বাদ যেনো দ্বিগুণ বেড়ে যায়। দেখতে যেমন চাঁদের মত গোল ও সাদা, খেতেও তেমন অপূর্ব। এর স্বাদের জন্য একটা খেলে মন ভরবে না কারোর। চলুন জেনে নিই কিভাবে তৈরি হয় এই রুমালি রুটি।
এই রুটি তৈরি করতে হয় উননের উপর। তাতে লোহার কড়াই উল্টে রেখে কড়াইয়ের উল্টো পিঠে হাতের কায়দায় উল্টে পাল্টে তৈরি করে নিতে হয় এই রুমালি রুটি (Rumali Roti)। এই সুস্বাদু রুটি তৈরি করতে আটা ও ময়দা দুটি লাগে কিন্তু সমান সমান পরিমানে মিশিয়ে নিতে হয়।
রুমালি রুটি তৈরি করা সম্পূর্ণ হাতের কারসাজি। আটা ও ময়দা সমান সমান পরিমাণে মিশিয়ে ভালো করে মেখে রেখে দিতে হবে। তারপর রুটি সঠিক পদ্ধতিতে বেলা ও সেঁকার উপরই নির্ভর করছে রুমালি রুটির আসল স্বাদ। এই রুটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে মুঘল সাম্রাজ্যের বহু ইতিহাস। কথিত আছে, রুমালি রুটি সত্যি নাকি রুমালের মত কাজ করতো।
মুঘল সাম্রাজ্যের সম্রাট, আমির–ওমরাহরা, অভিজাত ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্যরা যখন একই টেবিলে খেতে বসতেন, তখন তাদের খাবার খালার পাশে রুমালি রুটি ভাঁজ করে রাখা থাকতো। খাওয়ার মাঝে মাঝে সেই রুমালি রুটিতে হাত মুছতেন তারা। তাদের হাত মোছার রুটি বলেই এর নাম হয়েছে রুমালি রুটি। খাবার শেষে এটিকে হাত মুছে ফেলে দেওয়া হতো। তবে এখন আর তার প্রয়োজন হয় না, বরং এর স্বাদের কারণে এক টুকরোও ফেলা হয়না।