নিজস্ব প্রতিবেদন : গরু পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) এখন তিহারে। তবে তাকে তিহার জেলে বন্দী করা হলেও সিবিআই এবং ইডি আধিকারিকরা কোনভাবেই থেমে থাকছেন না। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা নিচ্ছেন একের পর এক ব্যবস্থা। ঠিক সেইরকমই বৃহস্পতিবার সাত সকালে সিবিআই আধিকারিকরা এমন এক পদক্ষেপ নিলেন যাতে কেষ্টর মাথায় নতুন করে বাজ পড়লো তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
বৃহস্পতিবার সাত সকালে সিবিআই আধিকারিকরা এসে পৌঁছান বোলপুরের অস্থায়ী সিবিআই ক্যাম্প রতন কুঠিতে। তারপর সেখান থেকে তারা পৌঁছে যান অনুব্রত মণ্ডলের ‘ছেলে’র বাড়িতে। অনুব্রত মণ্ডলের একমাত্র মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল ছাড়া আর কোন সন্তান না থাকলেও বিদ্যুৎ বরণ গায়েনকে নিজের ছেলের মতই ভালোবাসেন তিনি। সেই বিদ্যুৎ বরণ গায়েনের বাড়িতেই এদিন হাজির হন সিবিআই আধিকারিকরা।
গরু পাচার কাণ্ডে এর আগেও একাধিকবার বিদ্যুৎ বরণ গায়েনকে তলব করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের তরফ থেকে। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি সেই তলব এড়িয়ে যান। তবে বৃহস্পতিবার গরু পাচার মামলার আইও সুশান্ত ভট্টাচার্য এবং আরও দুজন বিদ্যুৎ বরণ গায়েনের বাড়িতে পৌঁছে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে সেই জিজ্ঞাসাবাদ থেকে বিস্ফোরক একাধিক তথ্য সিবিআই আধিকারিকদের হাতে এসেছে।
গরু পাচার মামলায় যখন দিন দিন অনুব্রত মণ্ডল আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাচ্ছেন এবং বারবার তার জামিন খারিজ হচ্ছে সেই সময় নতুন করে বিদ্যুৎ বরণ গায়েনের বাড়িতে পৌঁছে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ বড়ই বিপদে ফেলছে বীরভূমের কেষ্টকে, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা। এর পাশাপাশি নতুন করে বিস্ফোরক তথ্য সিবিআই-এর হাতে আসা মানেই সুকন্যা মণ্ডল থেকে শুরু করে অনুব্রত বিপদ আরও বৃদ্ধি পাওয়া তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
বিদ্যুৎ বরণ গায়েন অনুব্রত মণ্ডলের নিজের ছেলের মতোই তার ছায়াসঙ্গী। বিভিন্ন সময় তাদের দুজনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বরণের উত্থানও চমকে দেওয়ার মতো। ২০০৮ সালে তিনি বোলপুর পৌরসভায় গাড়ির খালাসী অর্থাৎ গ্রুপ ডি কর্মী হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর তৃণমূল সরকারের আসতেই তার প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। অস্থায়ী কর্মী থেকে হয়ে যান স্থায়ী কর্মী, এর পাশাপাশি সুকন্যা মন্ডলের দুটি কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে ডিরেক্টর পদে রয়েছেন। পৌরসভার গ্রুপ ডি কর্মী থেকে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে এখন তার সম্পত্তি বেড়েছে কয়েক গুণ। বোলপুর শহরে ৪টি বাড়ি, একাধিক গাড়ি, জমি, জায়গা সহ একাধিক সম্পত্তি।