নিজস্ব প্রতিবেদন : চন্দ্রযান-২ (Chandrayaan-2) হোক অথবা চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3), বাঙালি বিজ্ঞানীদের অবদান সবসময় থেকে যায়। কেননা উত্তর থেকে দক্ষিণ, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গার বাঙালি বিজ্ঞানীরা ইসরোতে (ISRO) কর্মরত। তাদের প্রত্যেকেরই কোন না কোন ভূমিকা থাকে যে কোন মহাকাশাভিযান অথবা অন্য কোন অভিযানের ক্ষেত্রে।
চন্দ্রযান-২ অভিযানের সময় অভিযানের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা থাকার কারণে রাতারাতি আলোচনায় আসতে দেখা গিয়েছিল হুগলির বিজ্ঞানী চন্দ্রকান্ত কুমারকে। যিনি আগের অভিযানের অ্যান্টেনার ডিজাইন কেমন হবে তা ঠিক করে দিয়েছিলেন। ঠিক একইভাবে আলোচনায় এসেছিলেন বীরভূমের বিজয় কুমার দাই। ময়ূরেশ্বর থানার অন্তর্গত দক্ষিণ গ্রামের ওই বিজ্ঞানী মহাকাশযানটির স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করার দায়িত্বে ছিলেন। গ্রাউন্ড স্টেশনের সাথে সমন্বয় স্থাপন করে মহাকাশযানের কমান্ড পাঠানো, কোনো প্রকার গলদ দেখা দিলে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছিল তার দায়িত্ব। ঠিক সেই রকমই এবার চন্দ্রযান-৩ অভিযানের ক্ষেত্রেও মিলল বাঙালি এক বিজ্ঞানীর সরাসরি যোগ।
বাঙালি ওই বিজ্ঞানী হলেন উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের অনুজ নন্দী। চন্দ্রযান-৩ এর ঐতিহাসিক মহাকাশ অভিযানে নাম জড়িয়েছে আশ্রম পাড়ার বাঙালি এই বিজ্ঞানীর। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের সঙ্গে তার নাম জড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবেই উত্তর দিনাজপুরের কোনায় কোনায় উৎসবের মেজাজ। শুধু তাই নয় গোটা বাংলা আজ অনুজ নন্দীকে নিয়ে গর্বিত।
অনুজ নন্দী ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয় পড়াশোনা করার পর বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনার জন্য রায়গঞ্জ কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে স্নাতক হওয়ার পর বেঙ্গালুরুর ইসরোতে গত ৮ বছর ধরে কর্মরত তিনি। অনুজ নন্দী মাঝে মাঝে উত্তর দিনাজপুর আসেন এবং তার পরই আবার চলে যান নিজের কাজে। চন্দ্রযান-৩ অভিযানের এক মাস আগে তিনি বাড়িতে এসেছিলেন আর এরপর শুক্রবার যখন চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণ সফল হয় এবং তা পৃথিবীর কক্ষপথে সফলভাবে স্থাপন করা সম্ভব হয় সেই সময় ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা হয় অনুজের।
চন্দ্রযান-২ অভিযানের সময় যেমন হুগলির ছেলে চন্দ্রকান্ত কুমার অ্যান্টেনার ডিজাইন তৈরি করেছিলেন, ঠিক সেই রকমই চন্দ্রযান-৩ অভিযানের ক্ষেত্রে ক্যামেরার ডিজাইন কেমন হবে তা ঠিক করার দায়িত্ব ছিল উত্তর দিনাজপুরের অনুজ নন্দীর। একজন বাঙালি বিজ্ঞানের এই অভিযানে সরাসরি যুক্ত থাকা বাঙালি হিসাবে সত্যিই গর্বের।