চন্দ্রযান-২ এর পর চন্দ্রযান-৩! নাম জুড়ল বীরভূমের দুঃস্থ পরিবারের বিজ্ঞানীর! গর্ব বাংলার

Shyamali Das

Updated on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : ২০১৯ এর ব্যর্থতা ভুলে শুক্রবার চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3)। ঐদিন ঠিক দুপুর ২:৩৫ মিনিটে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে রকেট উৎক্ষেপণ করা হয়। যাতে চড়েই চাঁদে পৌঁছে যাবে চন্দ্রযান-৩। চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া এই চন্দ্রযান-৩ এর সফল উৎক্ষেপণ হয়েছে। তবে চাঁদের মাটিতে পৌঁছাতে অন্ততপক্ষে ৪৫ দিন সময় লাগবে। আর সেই অপেক্ষাতেই বসে রয়েছেন ভারতীয়রা।

Advertisements

চন্দ্রযান-৩ নিয়ে যখন দেশজুড়ে শুরু হয়েছে আলাদা উৎসাহ উদ্দীপনা ঠিক সেই সময় এই অভিযানের সঙ্গে বাঙালি দুই বিজ্ঞানীর খোঁজ নিল। একজন হলেন উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের অনুজ নন্দী আর একজন বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের দক্ষিণ গ্রামের বাসিন্দা বিজয় কুমার দাই (Bijoy Kumar Dai)। শুক্রবার চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় বীরভূমের এই বিজ্ঞানীকে নিয়ে শুরু হয় একের পর এক পোস্ট।

Advertisements

বিজয় কুমার দাই এর আগে ২০১৯ সালে চন্দ্রাভিযান চন্দ্রযান-২ সঙ্গেও সরাসরি যুক্ত ছিলেন। তাঁর কাজ ছিল মহাকাশযানটির স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা। গ্রাউন্ড স্টেশনের সাথে সমন্বয় স্থাপন করে মহাকাশযানে কমান্ড পাঠানো। কোনো প্রকার গলদ দেখা দিলে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এরপর আবারও এই বছর চন্দ্রযান-৩ এর সঙ্গেও তিনি যুক্ত বলেই দাবি করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া এবং পরিবারের সদস্যদের তরফ থেকে। যদিও ঠিক কি দায়িত্ব রয়েছে তার তা জানা যায়নি। পরিবারের সদস্যরা সেই উত্তর দিতে পারেননি এবং বিজয় কুমার দাইয়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি।

Advertisements

বিজয় কুমার বীরভূমের দক্ষিণ গ্রামে এক দরিদ্র চাষি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮৪ সালে। বর্তমানে কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। বাবা নারায়ন চন্দ্র দাই একজন চাষী। বিজয় কুমার দাই ছোট থেকে গ্রামেরই প্রাথমিক এবং উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াকালীন স্কুলের শিক্ষকরা তাঁর মেধার পরিধি উপলব্ধি করতে পারেন। কেননা তিনি এমন একজন পড়ুয়া ছিলেন যিনি কোনদিন কোন ক্লাসে প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হননি। যখন তিনি অষ্টম শ্রেণীতে পড়তেন তখন তাঁর মেধার জন্য তাঁর হাতে নিচু ক্লাসের দায়িত্বও দিয়ে দিতেন স্কুলের শিক্ষকরা (যখন শিক্ষক কম আসতেন)।

তিনি অষ্টম শ্রেণীতেই জাতীয় স্কলারশিপ অর্জন করেছিলেন। মাধ্যমিকে অঙ্কতে পেয়েছিলেন ১০০% নম্বর, যা স্কুলের ইতিহাসে ছিল প্রথম। গ্রামের স্কুল পড়াশোনার পর তিনি যান বেলুড় মঠে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরে পড়াশোনার জন্য। তারপর একে একে কল্যাণী সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে উত্তীর্ণ, গেট পরীক্ষা দিয়ে যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে ECE থেকে এমটেক করতে করতে ইসরোতে একজন বিজ্ঞানী হিসাবে ২০০৭ সালে নিযুক্ত হন। একজন বিজ্ঞানী হিসাবে গবেষণা চালাতে চালাতে তিনি এমটেক সম্পূর্ণ করেন।

বিজয় কুমারের দাইয়ের ভাই বাপি দাই, দাদা বিনয় কুমার দাই, বাবা নারায়ণ চন্দ্র দাই, মা শ্যামলী দাই প্রত্যেকেই ছেলের এমন সাফল্যে গর্বিত। শুধু পরিবারের সদস্যরা নন, ছেলের এমন সাফল্যে গর্বিত গোটা জেলা থেকে শুরু করে রাজ্য, দেশ। প্রত্যেকের আশা আগামী দিনে বিজয় বাবু আরও সাফল্য অর্জন করবেন এবং দেশের হয়ে কাজ করে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

Advertisements