নিজস্ব প্রতিবেদন : দিন কয়েক ধরেই দিঘায় (Digha) ইয়েলো বেলি সাপের (Snake) আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই সাপের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই রয়েছেন যারা রীতিমতো সমুদ্রের স্নান করতে নামতে ভয় পাচ্ছেন। স্থলভাগে যে সকল সাপ দেখা যায় তার থেকে জলে যে সকল সাপ বসবাস করে তারা অনেক বেশি বিষধর। কিন্তু দীঘায় নতুন যে সাপের আতঙ্ক ছড়িয়েছে তা নিয়ে কতটা আতঙ্কিত হওয়ার কারণ রয়েছে তা নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি দীঘায় যে ইয়োলো বেলি সাপের আতঙ্ক ছড়িয়েছে তার বিজ্ঞানসম্মত নাম হল হাইড্রোফিস প্লাটুরাস। এই বিষধর সাপ আটলান্টিক মহাসাগর ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন গ্রীষ্মমন্ডলীয় সমুদ্রের জলে পাওয়া যায়। এই সাপটি ছাড়াও সামুদ্রিক যে সকল সাপ রয়েছে সেই সকল সাপের বিষে রয়েছে নিউরোটক্সিন এবং মায়োটক্সিন। যা কামড়ালে সরাসরি মানুষের মায়োগ্লোবিনুরিয়া, নিউরোমাসকুলার প্যারালাইসিস বা সরাসরি কিডনি ক্ষতির সাথে কঙ্কাল পেশীর ক্ষতি করে।
কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে দীঘায় এই সাপ নিয়ে যেভাবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে তার রীতিমতো উদ্বেগজনক হয়ে পড়লেও উদ্বেগের কারণ নেই বলেই জানাচ্ছেন জাতীয় বন্যজীব অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর সদস্য দীনবন্ধু বিশ্বাস। তিনি তার ২৫ বছরের কর্মজীবনে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি বিষধর এবং নির্বিশেষ সাপ উদ্ধার করেছেন এবং তাদের পুনর্বাসন দিয়েছেন। তিনি তার অভিজ্ঞতা থেকে জানিয়েছেন, এই সাপ এই প্রথম দেখা গিয়েছে তা নয়। এর আগেও নামখানাতে এই ধরনের সাপ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। এমনকি সামুদ্রিক বড় রিঠা মাছের পেট থেকেও বেরিয়েছে এই ধরনের সাপ। ১৫ বছর আগেও এই ধরনের সাপ দেখা গিয়েছে।
দীঘার সমুদ্রে যে সাপ নিয়ে এত আতঙ্ক ছড়িয়েছে সেই সাপ সত্যিই বিষধর তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু এই সাপের পরিপ্রেক্ষিতে সমুদ্রে স্নান করতে নামার ক্ষেত্রে যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে তার বিরোধিতা করেছেন দীনবন্ধু বিশ্বাস। কারণ হিসাবে তিনি জানিয়েছেন, সামুদ্রিক সাপেদের কামড় দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে না বললেই চলে। আবার যেসকল সাপ নিয়ে এত আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সেই সাপেরা আক্রমণাত্মক তো নয়ই, বরং লাজুক।
এর পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ‘সামুদ্রিক সাপ মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীদের থেকে দূরে সাঁতার কাটতে চায়। এমনকি এরা যদি কামড়ও দেয়, তবে খুব কমই বিষ ঢালতে পারে। কারণ তাদের বিষ দাঁতগুলি স্থলজ বিষধর সাপ থেকে আলাদা আকৃতির হয়। এগুলি ছোট এবং সহজেই ভেঙে যায়। সামুদ্রিক সাপের কামড় বিরল।’ যে কারণে বিশেষজ্ঞদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ‘অযথা আতঙ্কিত না হয়ে মনের আনন্দে সমুদ্রের জলে ঝাঁপ দিন’।